ঘরে বসে মাত্র ২ মিনিটে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম জেনে নিন। বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে ঘরে বসে শুধুমাত্র একটি স্মার্টফোন ও এনআইডি কার্ডের কপি দিয়ে সহজেই বিকাশ একাউন্ট খোলা সম্ভব। তবে বিভিন্ন ভাবেই বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়।
আপনিও কি বিকাশ একাউন্ট খুলতে চাচ্ছেন। তাহলে আমার এই লেখাটি সম্পূর্ণ অনুসরণ করুন। নিজে নিজেই বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবেন। এছাড়া নতুন বিকাশ একাউন্ট খুললে বিকাশের বোনাস তো পাচ্ছেনই। তো আর দেরি কেন আজই আপনার বিকাশ একাউন্ট করে ফেলুন।
বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৪ | How to open bKash Account
৪ ভাবে বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়। নিচের যেকোন একটি মাধ্যম ব্যবহার করে বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবেন। যথা:
১. বিকাশের মোবাইলের অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে
২. বিকাশ এজেন্ট এর মাধ্যমে
৩. ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন পয়েন্টের মাধ্যমে
৪. বিকাশ গ্রাহক কেন্দ্রে গিয়ে
বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য কি কি প্রয়োজন?
- NID (জাতীয় পরিচয় পত্র)/ Birth Certificate (জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট)
- স্মার্টফোন, তবে বাটন মোবাইলেও বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়।
- পাসপোর্ট সাইজ ছবি
ঘরে বসে বিকাশ অ্যাপ দিয়ে একাউন্ট খোলার নিয়ম
ঘরে বসে সহজেই বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে আপনি বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবেন।
অ্যাপ দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য যা যা লাগবে:
- স্মার্টফোন
- মূল ভোটার আইডি কার্ড
ঘরে বসে বিকাশ অ্যাপ দিয়ে একাউন্ট খোলার ধাপসমূহ
১. প্রথমে আপনার মোবাইলে Play store অথবা Apple store থেকে বিকাশ অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিন।
২. ডাউনলোড সম্পন্ন হয়ে গেলে বিকাশ অ্যাপটি ওপেন করুন।
৩. এবার লগইন/রেজিস্ট্রেশন বাটনে ক্লিক করুন
৪. আপনি যে মোবাইল নাম্বারে বিকাশ একাউন্ট খুলতে চান সেই মোবাইল নাম্বারটি সঠিকভাবে বসিয়ে লিখে নিন।
৫. এরপর যে মোবাইল অপারেটরের সিম ব্যবহার করছেন সেটি সিলেক্ট করে দিন, যেমন: রবি, গ্রামীণফোন, বাংলালিংক।
৬. এবার আপনার মোবাইলে ৬ ডিজিটের একটি OTP (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) পাঠানো হবে, ৬ ডিজিটের গোপন নাম্বারটি সঠিকভাবে সাবমিট করুন।
৭. এরপর, বিকাশের নিয়ম এবং শর্তাবলী দেখে এবং সম্মতি দিয়ে পরবর্তী ধাপে এগিয়ে যেতে হবে।
৮. রেজিস্ট্রেশন শুরু করার জন্য আপনার মূল এনআইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্রের সামনের অংশ ও পেছনের অংশয়ের ছবি ভালোভাবে তুলে সাবমিট করতে হবে।
৯. আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রে উল্লেখ করা নাম, ঠিকানা ও অন্যান্য তথ্য ঠিক আছে কি না তা যাচাই করুন।
১০. এবার আপনার নিজের ছবি বা সেলফি তুলে সাবমিট করতে হবে। ছবি তোলার সময় ডানে, বামে তাকাবেন এবং দুই থেকে তিনবার দ্রুত চোখ খুলবেন এবং বন্ধ করবেন।
১১. রেজিস্ট্রেশনের সকল তথ্য যাচাই করে সাবমিট করুন।
১২. এরপর কনফার্মেশন এসএমএসের জন্য অপেক্ষা করুন, এসএমএস পেলে লগইন করুন।
বিকাশ একাউন্ট পাসওয়ার্ড সেট করার নিয়ম
বিকাশ একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন কনফারমেশন পাওয়ার পরের ধাপটি হচ্ছে বিকাশ একাউন্ট পাসওয়ার্ড সেট করা। বিকাশ একাউন্ট পাসওয়ার্ড সেট করার জন্য নিচের ধাপসমূহ যথাযথভাবে অনুসরণ করুন:
১. একাউন্ট কনফার্মেশন মেসেজ পাওয়ার পর পুণরায় বিকাশ অ্যাপটি ওপেন করুন।
২. আপনার বিকাশ একাউন্টের নাম্বারটি বসিয়ে পরবর্তী ধাপে এগিয়ে যান।
৩. আপনার মোবাইলে আসা ৬ ডিজিটের OTP (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) নাম্বারটি লিখে সাবমিট করুন।
৪. এবার আপনি আপনার পছন্দমত ৫ ডিজিটের গোপন নতুন পিন কোড সেট করুন। (তবে ১২৩৪৫ বা ২৩৪৫৬ এমন সহজ পিন কোড দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন)।
৫. পূর্বে সাবমিট করা ৫ ডিজিটের গোপন পিনটি পুণরায় লিখে কনফার্ম করুন।
বিকাশ একাউন্ট সাজানোর নিয়ম
আপনার বিকাশ একাউন্ট খোলার কাজ প্রায় শেষ। বিকাশ একাউন্ট খোলার সর্বশেষ ধাপ হচ্ছে বিকাশ অ্যাপে আপনার নাম ও ছবি সংযুক্ত করা।
১. আপনার বিকাশ নাম্বার এবং গোপন পিন কোড দিয়ে বিকাশ একাউন্টে লগইন করুন।
২. এরপর আপনার নাম সেট করুন এবং পরবর্তী ধাপে আপনার ছবি সিলেক্ট করে সেভ করুন।
অভিনন্দন! আপনার বিকাশ একাউন্ট টি সফলভাবে সক্রিয় হয়ে গিয়েছে, আপনি চাইলে আপনার প্রয়োজনীয় লেনদেন চালু করতে পারেন।
⭐️⭐️⭐️ আমাদের সর্বশেষ আপডেট পেতে Google News এ Follow করুন ⭐️⭐️⭐️
এজেন্টের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
আপনার যদি স্মার্টফোন না থাকে, আপনি যদি বাটন ফোনে বিকাশ একাউন্ট খুলতে চান তাহলে আপনাকে বিকাশ এজেন্ট পয়েন্টে যেতে হবে। এমনকি স্মার্টফোনে বিকাশ খুলতে সমস্যা হলে, বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে সহজেই বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবেন।
বিকাশ এজেন্টের কাছে একাউন্ট খোলার জন্য যা যা লাগবে:
- NID (জাতীয় পরিচয় পত্র) এর মূল কপি এবং ফটোকপি
- একটিভ মোবাইল, এবং
- পাসপোর্ট সাইজ ছবি (১কপি)
এজেন্ট পয়েন্টে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম:
উপরোক্ত কাগজপত্রাদি নিয়ে বিকাশ এজেন্টের নিকট জমা দিলে বিকাশ এজেন্ট তৎক্ষনাৎ আপনার বিকাশ একাউন্ট খুলে দিবে।
বিকাশের এজেন্ট যখন আপনার সকল তথ্য সাবমিট করবে, এবং সাবমিট করার কনফার্মেশন এসএমএসের জন্য অপেক্ষা করতে হবে । এরপর আপনার বিকাশ নাম্বারে নিশ্চিতকরণ এসএমএস আসবে।
এবার আপনাকে ৫ ডিজিটের গোপন পিন সেট করে বিকাশ একাউন্ট-টি সক্রিয় করতে হবে।
ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন পয়েন্টের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
আপনি যদি ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট খুলতে না পারেন তাহলে আপনার নিকটস্থ ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন পয়েন্টের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবে।
ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন পয়েন্টের মাধ্যমে একাউন্ট খোলার জন্য যা যা লাগবে:
- স্মার্টফোন অথবা ফিচারফোন এবং
- ভোটার আইডি কার্ডের মূল কপি।
ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন পয়েন্টের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম:
১. আপনার মোবাইল নাম্বার এজেন্টকে দিন
২. আপনার মোবাইল ফোনে আসা রেফারেন্স নাম্বার এজেন্টকে দিন।
৩. এজেন্ট আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের উভয় পাশের ছবি তুলবেন।
৪. আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রে উল্লেখ করা নাম, ঠিকানা ও অন্যান্য তথ্য ঠিক আছে কি না তা যাচাই করে আপনার ছবি তুলবে
৫. সকল তথ্য সঠিকভাবে দেওয়া সম্পন্ন হলে একটি কনফারমেশন মেসেজ পাবেন।
৬. এরপর আপনার ৫ ডিজিটের পিন সেট করে বিকাশ একাউন্ট খোলার ধাপ সম্পন্ন করুন
গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
নিকটবর্তী গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে বিকাশ একাউন্ট খুলতে নিয়ে আসুন
১. মোবাইল ফোন
২. জাতীয় পরিচয়পত্র (মূল এবং ফটোকপি)/ মূল ড্রাইভিং লাইসেন্স/ মূল পাসপোর্ট
৩. ১ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি
একাউন্ট ওপেনিং ফরমটি পূরণ করুন এবং আপনার বৃদ্ধাঙ্গুলির ছাপ ও স্বাক্ষর দিন।
বিকাশ একাউন্ট খোলার পর আপনাকে আপনার বিকাশ মোবাইল মেন্যুটি এক্টিভেট করে নিতে হবে। আপনার মোবাইল মেন্যু এক্টিভেট করতে নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করুনঃ
১. *২৪৭# ডায়াল করে বিকাশ মোবাইল মেন্যুতে যান।
২. “ এক্টিভেট মোবাইল মেন্যু” বেছে নিন।
৩. বিকাশ একাউন্টের জন্য ৫ ডিজিটের পিন নম্বরটি প্রবেশ করান
৪. কনফার্ম করার জন্য আপনার পিন নম্বরটি আবার প্রবেশ করান
সকল প্রক্রিয়া সঠিক ভাবে সম্পন্ন হবার পর আপনার মোবাইল নম্বরটি একটি বিকাশ একাউন্ট নম্বর হিসেবে গণ্য হবে। আপনার বিকাশ একাউন্ট এর মাধ্যমে প্রাথমিক ভাবে মোবাইল রিচার্জ, ক্যাশ ইন এবং টাকা গ্রহণ সেবা ব্যবহার করতে পারবেন। তবে, আপনার KYC ফরম এর তথ্য যাচাই হয়ে গেলে, ৩-৫ দিনের মধ্যে আপনি “ক্যাশ আউট”, “ মোবাইল রিচার্জ “, “পেমেন্ট” এবং বিকাশ এর অন্যান্য সেবা সমূহ উপভোগ করতে পারবেন। আপনার একাউন্টটি সম্পূর্ণভাবে সক্রিয় হওয়ার পর *247# ডায়াল করে দিন রাত ২৪ ঘণ্টা, সপ্তাহে ৭ দিন বিকাশের সেবা ব্যবহার করতে পারবেন। একজন গ্রাহক গ্রাহক সেবা কেন্দ্র অথবা গ্রাহক সেবা থেকে একাউন্ট খুললে সাথে সাথে বিকাশ এর সকল সেবা উপভোগ করতে পারবেন।
শেষ কথা
বিকাশ একাউন্ট খোলার সকল ধরনের মাধ্যমই এখানে আলোচনা করা হয়েছে। আপনার জন্য যে মাধ্যম উত্তম হয় সেই মাধ্যমে নতুন বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারেন। বিকাশ সম্পের্কে আরও কোন কিছু জানার থাকলে এই লেখার কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন অথবা আমাদের বিকাশ সেকশনে ব্রাউজ করুন।