ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যাংক-কোম্পানীর পরিচালনা পর্ষদের গঠন, পরিচালকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা অত্যাবশ্যক। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রকাশিত “ব্যাংক-কোম্পানীর পরিচালনা পর্ষদের গঠন এবং পরিচালকগণের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কিত নীতিমালা” (বিআরপিডি সার্কুলার নং-০২, তারিখ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪) অনুযায়ী একটি ব্যাংক কোম্পানীতে কতজন পরিচালক থাকবেন, কিভাবে পরিচালক পর্ষদ গঠিত হবে এবং তাদের মেয়াদ সম্পর্কে সহজ ভাষায় উপস্থাপন করা হলো
ব্যাংক কোম্পানীর পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক সংখ্যা
ব্যাংক কোম্পানী আইন ২০২৩ সালে অধিকতর সংশোধন করা হয়। উক্ত নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, ব্যাংক কোম্পানীতে পরিচালনা পর্ষদে মোট পরিচালক সংখ্যা হবে মোট ২০ জন। ব্যাংকে পরিচালক সংখ্যা যদি ২০ জন হয়, তাহলে তাতে অন্যূন ৩ জন স্বতন্ত্র পরিচালক থাকতে হবে। আর পরিচালক সংখ্যা যদি ২০ জনের কম হয়, তাহলে তাতে অন্যূন ২ জন স্বতন্ত্র পরিচালক থাকতে হবে।
ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদে পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণ
একক পরিবার হতে সর্বোচ্চ ৩ (তিন) জন সদস্য পরিচালক পদে থাকতে পারবেন এবং পরিবারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট/নিয়ন্ত্রণাধীন সর্বোচ্চ ২ (দুই) টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি পরিচালক থাকতে পারবেন। তবে, কোনো প্রতিষ্ঠান/কোম্পানীর পক্ষে সর্বোচ্চ ১ (এক) জন প্রতিনিধি পরিচালক থাকতে পারবেন। কোনো প্রাকৃতিক ব্যক্তি শেয়ারধারকের পক্ষে প্রতিনিধি পরিচালক হতে পারবেন না।
ব্যাংকে পরিচালকদের মেয়াদ
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রকাশিত “ব্যাংক-কোম্পানীর পরিচালনা পর্ষদের গঠন এবং পরিচালকগণের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কিত নীতিমালা” (বিআরপিডি সার্কুলার নং-০২, তারিখ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪) অনুযায়ী, ব্যাংকের পরিচালকদের মেয়াদ সর্বোচ্চ ১২ (বারো) বছর। একাদিক্রমে ১২ বছর পূর্ণ করার পর একজন ব্যক্তি ৩ (তিন) বছরের জন্য অযোগ্য হবেন, এরপর পুনরায় নিযুক্ত হতে পারবেন।
পরিচালকদের অবসর গ্রহণের নিয়ম
প্রথম বার্ষিক সাধারণ সভায় সকল পরিচালক অবসর গ্রহণ করবেন। এরপর প্রতি বার্ষিক সাধারণ সভায় জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে এক-তৃতীয়াংশ পরিচালক অবসর গ্রহণ করবেন। অবসর গ্রহণকারী পরিচালক পুনরায় নির্বাচিত হতে পারবেন।
শেষ কথা
এই নীতিমালা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদে নিয়মিত পরিবর্তন নিশ্চিত হবে এবং দীর্ঘদিন ধরে একই ব্যক্তিদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা বন্ধ হবে। এর ফলে ব্যাংকিং খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পাবে এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়তা হবে।