ব্যাংক কোম্পানী আইন ১৯৯১ এর অধিকতর সংশোধন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে ব্যাংক-কােম্পানী (সংশোধন) আইন, ২০২৩ পাস করা হয়। ব্যাংক কোম্পানী (সংশোধন) আইন, ২০২৩ এর যেসকল সংশোধন ও নতুন ধারা সংযোজন করা হয়েছে তার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নিচে উল্লেখ করা হলো।
ব্যাংকে কত জন স্বতন্ত্র পরিচালক থাকবেন?
আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইন অথবা কোন ব্যাংক-কোম্পানীর সংঘ/ম্মারক বা সংঘবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, অন্যূন ৩ (তিন) জন স্বতন্ত্র পরিচালকসহ কোন ব্যাংক-কোম্পানীতে সর্বোচ্চ ২০ (বিশ) জন পরিচালক থাকিবেন।
তবে শর্ত থাকে যে, কোন ব্যাংক-কোম্পানীর পরিচালক সংখ্যা ২০ (বিশ) জনের নিয়ে হইলে স্বতন্ত্র পরিচালকের সংখ্যা অন্যুন ২ (দুই) জন হবে।
আরো শর্ত থাকে যে, স্বতন্ত্র পরিচালকের সর্বোচ্চ সংখ্যা, ফি এবং নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, সময় সময়, নির্দেশনা জারী করিতে পারবে।
স্বতন্ত্র পরিচালক কারা হবেন?
স্বতন্ত্র পরিচালক বলতে এইবৃপ ব্যক্তিকে বোঝাবে যিনি ব্যাংক-কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা ও শেয়ারধারক হইতে স্বাধীন এবং যিনি কেবল ব্যাংক-কোম্পানীর স্বার্থে স্বীয় মতামত প্রদান করবেন এবং ব্যাংকের সহিত কিংবা ব্যাংক সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তির সহিত যাহার অতীত, বর্তমান বা ভবিষ্যত কোন প্রকৃত স্বার্থ কিংবা দৃশ্যমান স্বার্থের বিষয় জড়িত নাই।
আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইন অথবা কোন ব্যাংক-কোম্পানীর সংঘ/ম্মারক বা সংঘবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন একক পরিবার হতে ৩ (ভিন) জনের অধিক সদস্য একই সময় কোন ব্যাংক-কোস্পানীর পরিচালক পদে অধিষ্ঠিত থাকবে না।
পরিচালক পদের মেয়াদ
আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইন অথবা কোন ব্যাংক-কোম্পানীর সংঘ/স্মারক বা সংঘবিধিতে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ব্যাংক কোম্পানী (সংশোধন) আইন, ২০১৮ কার্যকর হইবার পর কোন ব্যক্তি কোন ব্যাংক-কোম্পানীর পরিচালক পদে একাদিক্রমে ১২ (বারো) বৎসরের অধিক অধিষ্ঠিত থাকতে পারবেন না।
কোন ব্যক্তি একাদিক্রমে ১২ (বারো) বৎসর কোন ব্যাংক কোম্পানীর পরিচালক পদে অধিষ্ঠিত থাকলে উক্ত মেয়াদ শেষ হইবার পর ৩ (তিন) বৎসর অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি উক্ত ব্যাংক-কোম্পানীর পরিচালক পদে পুন্নযুক্ত হইবার যোগ্য হবেন না।
এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কোন ব্যক্তি পরিচালক পদে ৩ (তিন) বৎসরের চাইতে কম সময় অধিষ্ঠিত না থাকিলে একাদিক্রমে ১২ (বারো) বৎসর গণনার ক্ষেত্রে উক্ত সময়ও অন্তর্ভুক্ত হবে।
ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতার তালিকা
ব্যাংক কোম্পানী আইন ১৯৯১ এ নতুন ধারা ২৭খ সন্নিবেশন করা হয়েছে। উক্ত ধারায় যেসকল নতুন বিধান সংযুক্ত করা হয়েছে তার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বিধান নিচে উল্লেখ করা হলো:
ইচ্ছাকৃত খেলাপী খণ গ্রহীতার নাম চুড়ান্তকরণের পূর্বে সংশ্লিষ্ট খণ গ্রহীতাকে তাহার বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ প্রদান করতে হবে, এবং অনুরূপ খণ গ্রহীতার নাম চুড়ান্তকরণের পর প্রত্যেক ব্যাংক-কোম্পানী ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ৭ (সাত) কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ষণ গরহীতাকে সেই মর্মে অবহিত করবে।
ইচ্ছাকৃত খেলাপী খণ গ্রহীতা হিসাবে চিহ্নিত হবার ফলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট আপীল করতে পারবে এবং এই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সংছার নিকট ইচ্ছাকৃত খেলাপী খণ গ্রহীতার তালিকা প্রেরণ করিতে পারিবে এবং তাহাদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, ট্রেড লাইসেন্স ইস্যুতে নিষেধাজ্ঞা এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ও রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানীজ অ্যান্ড ফার্মস (RJSC) এর নিকট কোম্পানী নিবন্ধনে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করিলে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
যদি কোন ব্যাংক-কোম্পানী বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান এই ধারার বিধান লঙ্ঘন করে, অথবা যদি বাংলাদেশ ব্যাংক এইরূপ বিবেচনা করে যে, কোন ব্যাংক-কোম্পানী বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান জ্ঞাতসারে বা ইচ্ছাকৃতভাবে এই ধারার বিধান লঙ্ঘন করে, তাহা হলে উক্ত লঙ্ঘনের জন্য উক্ত ব্যাংক-কোম্পানী বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উপর অন্যূন ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা এবং অনধিক ১ (এক) কোটি টাকা জরিমানা আরোপিত হবে, এবং যদি উক্ত লঙ্ঘন অব্যাহত থাকে, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘনের প্রথম দিনের পর প্রত্যেক দিনের জন্য অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব ১ (এক) লক্ষ টাকা জরিমানা আরোপিত হবে।
ব্যাংক-কােম্পানী (সংশোধন) আইন, ২০২৩ ডাউনলোড করতে নিচের ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করুন