ট্রেড লাইসেন্স (Trade License) করার নিয়ম

Noor

Updated on:

trade-license-bangladesh

Trade মানে হচ্ছে ব্যবসা আর License মানে হচ্ছে অনুমতি অর্থাৎ ট্রেড লাইসেন্স মানে হচ্ছে ব্যবসার অনুমতিপত্র । বাংলাদেশে যেকোন ব্যবসা শুরু করতে হলে, ট্রেড লাইসেন্স বা ব্যবসার অনুপতিপত্র সংগ্রহ করতে হয়। উদ্যোক্তাদের আবেদনের ভিত্তিতে ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করা হয়। ট্রেড লাইসেন্স বিশেষভাবে শুধুমাত্র লাইসেন্সধারী ব্যক্তির নামে প্রদান করা হয় এবং এটা কোনোভাবে হস্তান্তরযোগ্য নয়। ট্রেড লাইসেন্সবিহীন ব্যবসা বাংলাদেশে সম্পূর্ণ অবৈধ এবং আইন বিরোধী। তাই, নতুন ব্যবসা শুরুর আগে অবশ্যই ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে নিবেন।

কোন জায়গা থেকে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হয়?

ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করে স্থানীয় সরকার, যথা: সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ। তাই ট্রেড লাইসেন্স এর জন্য আপনার নিকটস্থ সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদ এ আবেদন করতে হবে।

ট্রেড লাইসেন্স এর প্রকারভেদ

উদ্যোক্তাদের জন্য দুই ধরনের ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করা হয়।

১. সাধারণ ট্রেড লাইসেন্স

২. ফ্যাক্টরী বা শিল্প প্রতিষ্ঠান ট্রেড লাইসেন্স

ট্রেড লাইসেন্স এর জন্য যেসকল কাগজপত্রাদি জমা দিতে হয়

সাধারণ ট্রেড লাইসেন্স করতে যেসকল কাগজপত্র প্রয়োজন হবে:

  • জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি
  • তিনকপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্থান নিজের হলে ইউপি/পৌর/সিটি কর্পোরেশনের হোল্ডিং ট্যাক্স এর রশিদ
  • ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্থান ভাড়ায় হলে ভাড়ার চুক্তিপত্র এবং জমা রশিদ
  • ব্যবসা যদি যৌথভাবে পরিচালিত হয়, তাহলে ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে পার্টনারশিপ ডিড/অঙ্গীকারনামা জমা দিতে হবে।
  • কোম্পানি ব্যবসার ক্ষেত্রে মেমোরেন্ডাম অব আর্টিকেল এবং সার্টিফিকেট অব ইনকর্পোরেশন জমা দিতে হবে।

শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য ট্রেড লাইসেন্স করতে উপরোক্ত কাগজপত্রসহ আরও যেসকল কাগজপত্র জমা দিতে হবে:

  • পরিবেশের ছাড়পত্রের কপি
  • প্রতিষ্ঠানের অবস্থান চিহ্নিত মানচিত্র
  • ফ্যাক্টরি/কারখানার পার্শ্ববর্তি অবস্থান/স্থাপনার মালিকের অনাপত্তিনামা
  • অগ্নিনির্বাপণ প্রস্তুতি সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র
  • সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভার এর নিয়ম-কানুন মেনে চলার অঙ্গিকারনামা- ১৫০/৩০০ টাকারজুডিশিয়ার স্ট্যাম্প এ স্বাক্ষরিত।

এছাড়াও শিল্প প্রতিষ্ঠানের ধরণ অনুসারে যেসকল কাগজপত্র জমা দিতে হবে

  • ক্লিনিক অথবা ব্যক্তিগত হাসপাতালের ক্ষেত্রে – স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অনুমোদন
  • ছাপাখানা ও আবাসিক হোটেলের ক্ষেত্রে – ডেপুটি কমিশনারের অনুমতি
  • রিক্রুটিং এজেন্সির ক্ষেত্রে – মানবসম্পদ রপ্তানি ব্যুরো কর্তৃক প্রদত্ত লাইসেন্স
  • অস্ত্র ও গোলাবারুদের ক্ষেত্রে – অস্ত্রের লাইসেন্স
  • ঔষধ ও মাদকদ্রব্যের ক্ষেত্রে – ড্রাগ লাইসেন্সের কপি
  • ট্রাভেলিং এজেন্সির ক্ষেত্রে – সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের অনুমতি

বি:দ্র: সংযুক্ত সকল কাগজপত্র সত্যায়িত হতে হবে। (প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড কর্মকর্তা/ওয়ার্ড কাউন্সিলর কর্তৃক)

কিভাবে ট্রেড লাইসেন্স করতে হয়?

১. নির্ধারিত আবেদন ফরমে ট্রেড লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করতে হয়ে। (সিটি কর্পোরেশন/ পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এই আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে।)

২. আবেদনপত্র পূরণ করে আবেদনপত্রের সাথে উদ্যোক্তাকে কিছু কাগজপত্র জমা সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকার কার্যালয়ে জমা দিতে হবে। ব্যবসার ধরনের উপর ভিত্তি করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ভিন্নতা থাকে। কি কি ধরনের কাগজপত্র জমা দিতে হবে, তা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে।

৩. আবেদনপত্রে সরবরাহকৃত তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আবেদনপত্র প্রাপ্তির পর লাইসেন্সিং সুপারভাইজার ব্যবসার ঠিকানায় সরেজমিনে পরিদর্শনে যান।

৪. লাইসেন্সিং সুপারভাইজার পরিদর্শনে সন্তুষ্ঠ হলে, উদ্যোক্তা নির্ধারিত লাইসেন্স ফি জমা প্রদানপূর্বক ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে পারেন। ব্যবসার ধরণভেদে ট্রেড লাইসেন্স ফি ভিন্নতা থাকে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এর স্থানীয় সরকার বিভাগ (সিটি কর্পোরেশন শাখা-২) এর জারিকৃত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশন আদর্শ কর তফসিল ২০১৬ এ উল্লেখিত ট্রেড লাইসেন্স ফি তালিকাটি এখানে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিন

ট্রেড লাইসেন্স আবেদন ফরম

বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশন এর ট্রেড লাইসেন্স আবেদন ফরম ডাউনলোড লিংক থেকে আপনার প্রয়োজনীয় ট্রেড লাইসেন্স আবেদন ফরম ডাউনলোড করে নিন। ডাউনলোড লিংক

ই-ট্রেড লাইসেন্স

অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমেও ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করা যায়। যাহাকে ই-ট্রেড লাইসেন্স বলে। তবে এই সেবাটি শুধুমাত্র কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন ও রংপুর সিটি কর্পোরেশনের অধীনে প্রাপ্য ট্রেড লাইসেন্সধারীদের জন্য প্রযোজ্য। আশা করা যায়, ধীরে ধীরে সারা বাংলাদেশেও ই-ট্রেড লাইসেন্স সেবা চালু হবে। ই-ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে https://www.etradelicense.gov.bd/ এ প্রবেশ করুন।

ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন

একটি ট্রেড লাইসেন্সের কার্যকারিতা থাকে ৩০শে জুন পর্যন্ত। তারপরে সেই ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করে প্রয়োজনীয় ফি জমা প্রদান করতে হয়। ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

Leave a Comment