আয়কর রিটার্ন দাখিলের পর যদি কোনো করদাতার মনে হয় যে, তার রিটার্নে ভুল তথ্য প্রদান করা হয়েছে বা কোনো তথ্য বাদ পড়েছে, তাহলে তিনি আয়কর আইন অনুযায়ী সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করতে পারেন। এই লেখায় সংশোধিত রিটার্ন কতদিনের মধ্যে দাখিল করা যাবে এবং কিভাবে সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করবেন বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
সংশোধিত রিটার্ন (Revise Return) দাখিলের কারণ
রিটার্ন দাখিলের পর যদি করদাতা বুঝতে পারেন যে, তার প্রদেয় কর সঠিকভাবে পরিগণিত বা পরিশোধিত হয়নি, তাহলে তিনি সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করতে পারেন। এর মধ্যে কিছু সাধারণ কারণ নিম্নরূপ:
(ক) আয়ের পরিমাণে ভুল: রিটার্নে আয় কম বা বেশি দেখানো হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, কোনো উৎস থেকে প্রাপ্ত আয় রিটার্নে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
(খ) দাবিকৃত কর অব্যাহতি বা ক্রেডিটের ভুল: যে কোন কর অব্যাহতি বা ক্রেডিট ভুল হারে বা অতিরিক্ত দাবি করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, বিনিয়োগ কর রিবেটের অতিরিক্ত দাবি।
(গ) অন্যান্য কারণ: উপরোক্ত দুটি কারণ ছাড়াও অন্যান্য যেকোনো কারণে যদি কর পরিমাণ ভুল হয়। উদাহরণস্বরূপ, ভুল কর সার্কেল নির্বাচন।
সংশোধিত রিটার্ন দাখিলের পদ্ধতি
সংশোধিত রিটার্ন দাখিলের জন্য করদাতাকে সংশোধনের কারণ উল্লেখ করে একটি লিখিত বিবৃতি দাখিল করতে হবে।
কতদিনের মধ্যে ভুল-সংশোধনী রিটার্ন (Revise Return) জমা দিতে হবে?
প্রাথমিক রিটার্ন দাখিলের তারিখ থেকে ১৮০ দিনের মধ্যে সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করতে হবে।
কখন সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করা যাবে না
নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করা যাবে না:
- প্রাথমিক রিটার্ন দাখিলের ১৮০ দিন পর: মূল রিটার্ন দাখিলের ১৮০ দিন শেষ হওয়ার পর সংশোধন করা যাবে না।
- একবার সংশোধিত রিটার্ন দাখিলের পর: শুধুমাত্র একবার সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করা যায়।
- মূল রিটার্ন অডিটের জন্য নির্বাচিত হওয়ার পর: ধারা ১৮২ অনুযায়ী অডিটের জন্য নির্বাচিত হলে সংশোধন করা যাবে না।
কর দিবসের আগে ও পরে সংশোধিত রিটার্ন দাখিলের বিধান
কর দিবসের মধ্যে সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করলে ধারা ১৭৩ অনুযায়ী প্রযোজ্য কর পরিশোধ করতে হবে।
কর দিবসের পর সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করলে, নতুন কোনো কর অব্যাহতি দাবি করা যাবে না যা মূল রিটার্নে দাবি করা হয়নি। এবং নতুন কোন কর অব্যাহতি দাবি করলে তা বাতিল করে নিয়মিত হারে কর আরোপ করা হবে।
উপসংহার
সংশোধিত রিটার্ন দাখিলের মাধ্যমে করদাতারা তাদের ভুল সংশোধন করে সঠিক পরিমাণ কর পরিশোধ করতে পারেন। তবে, সংশোধনের জন্য নির্ধারিত সময়সীমা ও নিয়মকানুন সম্পর্কে সচেতন থাকা গুরুত্বপূর্ণ।