মাত্র ১ মিনিটের অনলাইনে জমির খতিয়ান যাচাই করা সম্ভব। বাংলাদেশের সবধরনের খতিয়ানই এখন জাতীয় ভুমি তথ্য ও সেবা কাঠামোর ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে। জরিপ বিভাগের মাধ্যমে প্রস্তুতকৃত সর্বশেষ খতিয়ান হচ্ছে আর, এস, খতিয়ান যা বিভিন্ন জায়গায় ভিন্ন (যেমন: বি এস এস খতিয়ান, বি আর এস খতিয়ান, সিটি জরিপ বা খতিয়ান ইত্যাদি) নামেও পরিচিত।
খতিয়ান
মৌজা ভিত্তিক এক বা একাধিক ভূমি মালিকের ভূ-সম্পত্তির বিবরণ সহ যে ভূমি রেকর্ড জরিপকালে প্রস্ত্তত করা হয় তাকে খতিয়ান বলে। এতে ভূমধ্যাধিকারীর নাম ও প্রজার নাম, জমির দাগ নং, পরিমাণ, প্রকৃতি, খাজনার হার ইত্যাদি লিপিবদ্ধ থাকে। আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের খতিয়ানের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। তন্মধ্যে সিএস, এসএ এবং আরএস উল্লেখযোগ্য। ভূমি জরিপকালে ভূমি মালিকের মালিকানা নিয়ে যে বিবরণ প্রস্তুত করা হয় তাকে “থতিয়ান” বলে। খতিয়ান প্রস্তত করা হয় মৌজা ভিত্তিক।
সি এস খতিয়ান
১৯১০-২০ সনের মধ্যে সরকারি আমিনগণ প্রতিটি ভূমিখণ্ড পরিমাপ করে উহার আয়তন, অবস্থান ও ব্যবহারের প্রকৃতি নির্দেশক মৌজা নকশা এবং প্রতিটি ভূমিখন্ডের মালিক দখলকারের বিররণ সংবলিত যে খতিয়ান তৈরি করেন সিএস খতিয়ান নামে পরিচিত।
এস এ খতিয়ান
১৯৫০ সালের জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন পাসের পর সরকার জমিদারি অধিগ্রহণ করেন। তৎপর সরকারি জরিপ কর্মচারীরা সরেজমিনে মাঠে না গিয়ে সিএস খতিয়ান সংশোধন করে যে খতিয়ান প্রস্তুত করেন তা এসএ খতিয়ান নামে পরিচিত। কোনো অঞ্চলে এ খতিয়ান আর এস খতিয়ান নামেও পরিচিত। বাংলা ১৩৬২ সালে এই খতিয়ান প্রস্তুত হয় বলে বেশির ভাগ মানুষের কাছে এসএ খতিয়ান ৬২র
খতিয়ান নামেও পরিচিত।
আর এস খতিয়ান
একবার জরিপ হওয়ার পর তাতে উল্লেখিত ভুলত্রুটি সংশোধনের জন্য পরবর্তীতে যে জরিপ করা হয় তা আরএস খতিয়ান নামে পরিচিত। দেখা যায় যে, এসএ জরিপের আলোকে প্রস্তুতকৃত খতিয়ান প্রস্তুতের সময় জরিপ কর্মচারীরা সরেজমিনে তদন্ত করেনি। তাতে অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়ে গেছে। ওই ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করার জন্য সরকার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরেজমিনে ভূমি মাপ-ঝোঁক করে পুনরায় খতিয়ান প্রস্তুত করার উদ্যোগ নিয়েছেন। এই খতিয়ান আরএস খতিয়ান নামে পরিচিত। সারাদেশে এখন পর্যন্ত তা সমাপ্ত না হলেও অনেক জেলাতেই আরএস খতিয়ান চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত হয়েছে।
সরকারি আমিনরা মাঠে গিয়ে সরেজমিনে জমি মাপামাপি করে এই খতিয়ান প্রস্তুত করেন বলে তাতে ভুলত্রুটি কম লক্ষ্য করা যায়। বাংলাদেশের অনেক এলাকায় এই খতিয়ান বি এস খতিয়ান নামেও পরিচিত।
বি এস খতিয়ান
সর্ব শেষ এই জরিপ ১৯৯০ সালে পরিচালিত হয়। ঢাকা অঞ্চলে মহানগর জরিপ হিসাবেও পরিচিত।
যেভাব জমির খতিয়ান যাচাই করবেন
১. প্রথমে https://rsk.land.gov.bd/citizen_corner/ লিংকে ক্লিক করুন।
২. এখানে প্রথমে বিভাগ, এরপর জেলা, এরপর উপজেলা এবং সর্বশেষ মৌজা বাছাই করুন।


৩. এরপর আপনার জমির খতিয়ান যাচাই করার চারটি অপশন পাবেন
(ক) খতিয়ান নং অনুযায়ী
(খ) দাগ নং অনুযায়ী
(গ) মালিকানা নাম অনুযায়ী
(ঘ) পিতা/স্বামীর নাম অনুযায়ী


এই চারটি অপশনের মধ্যে যে অপশনের তথ্য আপনার নিকট আছে সেই অপশনের বাম পাশের গোল ঘরে মাউস দিয়ে ক্লিক করুন। গোল ঘরে সিলেক্ট করলে তার নিচেই আরেকটি বক্স দেখা যাবে। তার ঠিক নিচে একটি ছোট বক্সটি আসবে, বক্সটি পূরণ করুন। অর্থাৎ খতিয়ান নম্বর সিলেক্ট করে থাকলে খতিয়ান নম্বরটি বক্সে লিখুন, দাগ নম্বর সিলেক্ট করে থাকলে দাগ নম্বরটি বক্সে লিখুন, মালিকের নাম সিলেক্ট করে থাকলে মালিকের নাম বক্সে লিখুন, মালিকের পিতা/স্বামীর নাম সিলেক্ট করে থাকলে পিতা/স্বামীর নাম বক্সে লিখুন।
৪. এরপর নিচে দুটি সংখ্যা যোগ করতে বলা হবে। সংখ্যা দুটি যোগ করে যোগফল নিচের বক্সে লিখুন।
৫. সর্বশেষ ‘খুজুন’ অপশনে ক্লিক করুন। আপনার অনুসন্ধানকৃত খতিয়ানটি মনিটরে দৃশ্যমান হবে।
এভাবে মাত্র ১ মিনিটেই আপনি আপনার অনুসন্ধানকৃত আর এস খতিয়ান যাচাই করতে পারবেন।