বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে, দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাংকগুলো থেকে তাদের অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটে আর কোনো তহবিল স্থানান্তর করা যাবে না। ইতোমধ্যে স্থানান্তরিত তহবিল আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ফেরত আনতে হবে। ডলার সংকট কাটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই পদক্ষেপ নিয়েছে। বাজারে ডলারের প্রবাহ বাড়লে এ নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হতে পারে। গত ১৬ই জানুয়ারি, ২০২৪ তারিখে বাংলাদেশ ব্যাংক বিআরপিডি সার্কুলার লেটার নং-০৪ এর মাধ্যমে ডমেস্টিক ব্যাংকিং হতে অফশোর ব্যাংকিং এ তহবিল স্থানান্তর রহিতকরণ নোটিশ প্রদান করে।
অফশোর ব্যাংকিং কি?
অফশোর ব্যাংকিং হলো এমন একটি ব্যাংকিং ব্যবস্থা যেখানে বিদেশ থেকে বিদেশি মুদ্রায় আমানত সংগ্রহ করা হয় এবং সেসব তহবিল বিদেশে বা দেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ দেওয়া হয়। অফশোর ব্যাংকিংয়ের নেতিবাচক প্রভাব মূল ব্যাংকিংয়ে পড়ে না।
অফশোর ব্যাংকিংয়ের তহবিল স্থানান্তর বন্ধের প্রভাব কী?
দেশের অফশোর ব্যাংকগুলো বিদেশ থেকে চাহিদা অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রায় আমানত সংগ্রহ করতে পারছিল না। তাই তাদের মূল ব্যাংক থেকে ডলার স্থানান্তরের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন ডলার সংকটের কারণে এই সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে।
এই পদক্ষেপের ফলে ব্যাংকগুলোর মূল ব্যাংকিং ইউনিট থেকে অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটে ডলার স্থানান্তর বন্ধ হবে। ফলে বাজারে ডলারের প্রবাহ কিছুটা হলেও বাড়বে। কিন্তু এর বিপরীতে ব্যাংকগুলোর অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ বিতরণ কার্যক্রম সঙ্কুচিত হবে। একই সাথে উদ্যোক্তাদের বিদেশি মুদ্রায় ঋণ গ্রহণ সঙ্কোচিত হয়ে পড়বে। সার্বিকভাবে অফশোর ব্যাংকিং কার্যক্রমের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, ২০১৯ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ বেড়ে যখন রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে তখন মূল ব্যাংক থেকে অফশোর ব্যাংকিংয়ে ডলার স্থানান্তরের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। ওই সময়ে ব্যাংকের নগদ মূলধনের ২০ শতাংশ তহবিল অফশোর ব্যাংকিংয়ে স্থানান্তরের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। ২০২০ সালে তহবিল স্থানান্তরের হার আরো বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করে। অর্থাৎ কোনো ব্যাংক তাদের মূল ইউনিট থেকে নগদ মূলধনের ৩০ শতাংশ অফশোর ব্যাংকিংয়ে স্থানান্তর করতে পারত।
অফশোর ব্যাংকিংয়ে তহবিল স্থানান্তর বন্ধের সার্কুলার ডাউনলোড
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অফশোর ব্যাংকিংয়ে তহবিল স্থানান্তর বন্ধের নতুন নির্দেশনা সংক্রান্ত সার্কুলারটি ডাউনলোড করতে এইখানে ক্লিক করুন।