ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার নিয়ম

কামরুল হাসান নূর

Updated on:

Voter Transfer BD

এই লেখার মাধ্যমে আমরা জানবো কিভাবে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করা যায় এবং ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বিষয়ে

আমাদের ভিতর অনেকেই আছেন যাদের বিভিন্ন কারণেই ভোটার এলাকা পরিবর্তন (Voter Transfer BD) করা প্রয়োজন হয়। জীবনযাপনের জন্য নিজ স্থায়ী এলাকা ছেড়ে অনেকেই অন্য এলাকায় যায়। চাকরী, লেখাপড়া, ব্যবসা যা একজন ব্যক্তির স্থান পরিবর্তনের কারণ হয়।

সাধারণ যে যে এলাকায় বসবাস করে সে সেই এলাকা ভোটার হয়ে যায়। আবার অনেকে তার স্থায়ী ঠিকানায় ভোটার হয়। কিন্তু বর্তমানে বসবাস স্থান পরিবর্তন করায় এই ভোটার এলাকা পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়ে যায়।

কিভাবে একজন ভোটার তার ভোটার এলাকা স্থানান্তর করবেন, কিভাবে ভোটার স্থানান্তরের ফরম পূরণ করবেন, কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হবে; সকল বিষয়ে আজকের লেখায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হবে।

ভোটার এলাকা স্থানান্তরিত করার নিয়ম

ভোটার এলাকা স্থানান্তর বা পরিবর্তন করার জন্য ফরম-১৩ পূরন করে যে এলাকায় স্থানান্তরি হবেন বা যে এলাকায় এখন ভোটার হতে চান সে এলাকার সংস্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে আবেদনকারীকে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে আবেদন করতে হবে।

এই ভোটার এলাকা স্থানান্তরের আবেদন ফরম-১৩ নির্বাচন অফিস থেকে সংগ্রহ করতে পারেন অথবা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকেও ডাউনলোক করে নিতে পারেন।

সকলের সুবিধার জন্য ফরম-১৩ এর ডাউনলোড লিংকটিতে এইখানে দিয়ে দিলাম। ফরম-১৩ ডাউনলোড করতে নিচের ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করুন।

⭐️⭐️⭐️আমাদের সর্বশেষ আপডেট পেতে Google NewsFollow করুন⭐️⭐️⭐️

ভোটার এলাকা পরিবর্তন হওয়ার ফরম পূরণ করার নিয়ম

ভোটার এলাকা পরিবর্তন ফরম-১৩ পূরণ করা কঠিন কোন বিষয় নয়। আপনারা যেকেউ সহজেই এই ফরমটি পূরণ করতে পারবেন। তারপরও নিচে ফরম-১৩ এর প্রতিটা বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করলাম।

ভোটার এলাকা পরিবর্তন ফরম পূরণ করতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:

০১নং ক্রমিক নম্বর  ফরমে আবেদনকারীর নাম বাংলায় লিখতে হবে।

০২নং ক্রমিক নম্বর ফরমে আবেদনকারীর এনআইডি কার্ড/ভোটার আইডি কার্ডের নম্বর লিখতে হবে।

০৩ নং ক্রমিক নম্বর ফরমে আবেদনকারীর জন্ম তারিখ লিখতে হবে।

০৪ নং ক্রমিক নম্বর ফরমে আবেদনকারী যে এলাকায় আগে ভোটার ছিল সে এলাকার ঠিকানা লিখতে হবে। সেক্ষেত্রে ভোটার নম্বর, ভোটার এলাকার নাম, গ্রাম/রাস্তার নাম ও নম্বর, বাসা/হোল্ডিং নম্বর, ভোটার এলাকার নম্বর, উপজেলা/থানার নাম, জেলার নাম সহ সবগুলো খালি জায়গা পুরণ করতে হবে।

৫ নং ক্রমিক নম্বর ফরমে আবেদনকারী যে এলাকার ভোটার হতে চাচ্ছেন সেই এলাকার ভোটার এলাকার নাম, ভোটার এলাকার নম্বর, গ্রাম/রাস্তার নাম ও নম্বর, বাসা/হোল্ডিং নম্বর, মোবাইল ফোন নম্বর, ডাকঘর, পোস্ট কোড, উপজেলা ও জেলার নাম লিখতে হবে।

০৬ নং ক্রমিক নম্বরে ফরমে বলা হয়েছে ০৫নং ক্রমিক নাম্বারে বর্ণিত ঠিকানায় আপনি কতদিন যাবত বসবাস করছেন তা উল্লেখ করে দিতে হবে। 

০৭ নং ক্রমিক নম্বর ফরমে বলা হয়েছে, আপনি কিসের জন্য ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে চান। আপনার ভোটার এলাকা পরিবর্তনের কারণ উল্লেখ করতে হবে।

০৮ নং ক্রমিক নম্বর ফরমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের বিষয়ে উল্লেখ আছে। আপনি যে এলাকায় আপনার ভোটার স্থানান্তর করতে চান সেই এলাকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে এই কাগজপত্রাদি সংগ্রহ করতে হবে।

ভোটার এলাকা পরিবর্তনের জন্য যেসব কাগজপত্র জমা দিতে হয়

ফরম-১৩ আবেদনপত্রের সাথে নিম্নের কাগজপত্র জমা দিতে হবে:

১) আবেদনকারীর NID ফটোকপি

২) যে এলাকায় স্থানান্তর হবেন সে এলাকার নাগরিকত্ব সনদ

৩) বিদ্যুৎ/পানি বিল/ট্যাক্স রশিদ/বাড়ি ভাড়ার প্রমানপত্র/ভাড়াটিয়া তথ্য ফরম

৪) ফরম-১৩ এর ২য় পৃষ্ঠায় আবেদনকারীকে সনাক্তকারী হিসেবে সংশ্লিষ্ট মেয়র/চেয়ারম্যান/কাউন্সিলর/মেম্বারের NID নাম্বার সহ নাম ও স্বাক্ষর, সিল থাকতে হবে।

আপনার ভোটার স্থানান্তরের আবেদনের স্ট্যাটাস কিভাবে জানবেন

ভোটার এলাকা স্থানান্তর করার আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পরে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হলে আপনার মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। প্রথম মেসেজে আপনার করণীয় কোন কিছু নাই। কিছুদিন পরে দ্বিতীয় আরেকটি মেসেজ পাবেন যে মেসেজে আপনার আবেদন গ্রহণ হয়েছে নাকি বাতিল হয়েছে নাকি আরও কোন কাগজপত্র নিয়ে সাক্ষাৎ করতে হবে তা জানিয়ে দেওয়া হবে। মেসেজে যদি বলা হয়ে থাকে যে আবেদন গ্রহণযোগ্য হয়েছে তাহলে আপনার আর কষ্ট করে নির্বাচন অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন নাই। কিন্তু যদি কোন মেসেজ না আসে তাহলে ১ থেকে ২ মাস পরে আবারও নির্বাচন অফিসে যেয়ে আপনার আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নিতে পারেন।

একবার ভোটার এলাকা স্থানান্তরিত হয়ে গেলে আপনি আবেদনকৃত এলাকার ভোটার হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হবেন এবং নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন।

ভোটার স্থানান্তর হলে কি নতুন এনআইডি কার্ড দেওয়া হয়?

না। ভোটার স্থানান্তর হলে নতুন কার্ড দেয়া হয় না। কেউ স্থানান্তরিত ঠিকানায় নতুন কার্ড নিতে চাইলে তাকে ২৩০/- সরকারি ফি জমা দিয়ে রিইস্যু আবেদন করে কার্ড সংগ্রহ করতে হবে।

শেষ কথা

ভোটার এলাকা পরিবর্তন বা স্থানান্তর আপনি বারে বারে করতে পারবেন না। তাই ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার আবেদন করার পূর্বে ভোটার এলাকা পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে নিশ্চিত হোন এবং যখনই নতুন ভোটার বা এনআইডি করবেন তখন চেষ্টা করবেন, সেই এলাকার এনআইডি করার যেখানে আপনি স্থায়ী বা দীর্ঘদিন বসবাস করার সম্ভাবনা আছে। তারপরও কখনও ভোটার এলাকা পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে উপরের ধাপসমূহ অনুসরণ করে আশা করা যায় আপনার কার্য সম্পাদন করতে পারবেন।

Leave a Comment