How to reduce Income Tax

যারা সরকারী অথবা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন তাদেরকে সীমিত আয়ের ভিতরেই চলতে হয়। নিজেদের কষ্টার্জিত টাকা থেকে প্রতিমাসে যখন আয়ের একটি অংশ আয়কর বাবদ কেটে রাখা হয় অথবা বছর শেষে বড় অংকের আয়কর দিতে হয় তখন সীমিত আয়ের মানুষদের জন্য ব্যাপারটা অনেক বেশি কষ্টকর। কিন্তু আগে থেকেই যদি আমরা যথার্থ আয়কর পরিকল্পনা করতে পারি তাহলে এই আয়করের পরিমাণটা আইনগত ভাবেই অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। সরকার দেশের বিনিয়োগখাত সমৃদ্ধ করতে, ব্যক্তিগত করদাতাদের নির্দিষ্ট কয়েকটি খাতে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করেছে এবং নির্ধারিতখাতে বিনিয়োগের বিপরীতে করদাতাদের নির্ধারিত হারে কর ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছে। আজকে আমরা জানবো, আয়কর রেয়াত (Income Tax Rebate) বা করছাড় পেতে যেসকল খাতে বিনিয়োগ করবো সেইখাতসমূহ, আয়কর রেয়াতের পরিমাণ এবং বিনিয়োগের সময় সম্পর্কে।

আয়কর রেয়াতের খাতসমূহ (Income Tax Rebate Sectors)

আয়কর রেয়াত পেতে হলে নির্ধারিত সময়ের ভিতর আপনাকে সরকারের নির্ধারিত খাতে বিনিয়োগ বা অনুদান করতে হবে। সরকার কয়েকটি বিনিয়োগখাত এবং কয়েকটি অনুদানখাত নির্ধারণ করেছেন, যার মাধ্যমে আয়কর রেয়াত পাওয়া সম্ভব। আমরা এখানে বিনিয়োগ ও অনুদান উভয় খাতসমূহই উল্লেখ করবো।

বিনিয়োগ খাতসমূহ:

  • জীবন বীমা প্রিমিয়াম (বাৎসরিক মোট বীমাকৃত অংকের সর্বোচ্চ ১০%)
  • সরকারী কর্মকর্তার প্রভিডেন্ট ফান্ডে চাঁদা
  • স্বীকৃত ভবিষ্যত তহবিলে নিয়োগকর্তা ও কর্মকর্তার চাঁদা
  • কল্যাণ তহবিল ও গোষ্ঠী বীমা তহবিলে চাঁদা
  • সুপার এনুয়েশন ফান্ডে প্রদত্ত চাঁদা
  • যেকোন তফসিলি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ডিপোজিট পেনশন স্কীমে বাৎসরিক সর্বোচ্চ ৬০,০০০ টাকা বিনিয়োগ
  • সঞ্চয়পত্র ক্রয়ে বিনিয়োগ
  • পুজি বাজারে নিবন্ধিত কোন শেয়ার, মিউচ্যুয়াল ফান্ড অথবা ডিবেঞ্চার এ বিনিয়োগ
  • বাংলাদেশ সরকারী অনুমোদিত ট্রেজারী বন্ডে বিনিয়োগ

অনুদান খাতসমূহ:

  • জাতীর জনকের স্মৃতি রক্ষার্থে নিয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানে অনুদান
  • যাকাত তহবিলে দান
  • জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত কোন দাতব্য হাসপাতালে দান
  • প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে স্থাপিত প্রতিষ্ঠানে দান
  • মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে প্রদত্ত দান
  • আগাখান ডেভেলমেন্ট নেটওয়ার্কে দান
  • ICDDRB তে প্রদত্ত দান
  • CRP সাভার এ প্রদত্ত দান
  • সরকার কর্তৃক অনুমোদিত জনকল্যানমূলক বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দান
  • এশিয়াটিক সোসাইট, বাংলাদেশ এ দান
  • ঢাকা আহসানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতালে দান
  • মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার্থে নিয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের কোন প্রতিষ্ঠানে অনুদান

আয়কর রেয়াতে পরিমাণ নির্ণয় (How to Calculate Income Tax Rebate)

প্রদেয় আয়করের কতটাকা আয়কর রেয়াত পাওয়া যাবে, সেই হিসাবটা কিছুটা জটিল। যারা আয়কর আইন সম্পর্কে নতুন, তাদের জন্য হিসাবটা করাটা প্রথমদিকে কষ্টকর।

একজন করদাতার বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত পরিগণনার ক্ষেত্রে ২টি বিষয় বিবেচিত হয়। যথা:

১. করদাতার মোট আয়

২. রেয়াত জন্য অনুমোদনযোগ্য অংক

অনুমোদনযোগ্য অংক নির্ধারন হবে-

১. রেয়াত পাওয়াযোগ্য খাতে করদাতার প্রকৃত বিনিয়োগ/অনুদানের পরিমাণ

২. করযোগ্য মোট আয়ের ২০%  [82C ধারার (2) উপধারায় বর্ণিত উৎস/উৎসসমূহ হতে প্রাপ্ত আয় এবং কর অব্যহতিপ্রাপ্ত বা হ্রাসকৃত করহার প্রযোজ্য এমন আয় থাকলে তা ব্যতিত]

৩. ১ কোটি টাকা

এই তিনটি মধ্যে যেটি কম

আয়কর রেয়াতের পরিমাণ হার নির্ধারনের সুত্র

মোট আয় ও অনুমোদনযোগ্য অংক এর ভিত্তিতে আয়কর রেয়াত পরিমাপের হার উল্লেখ করা হলো:

একজন করদাতার মোট করযোগ্য আয় নির্বিশেষ রেয়াতযোগ্য অংকের উপর ১৫% হারে কর রেয়াতের বিধান করা হয়েছে।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন দাখিলে ব্যর্থ হলে কর রেয়াতের প্রাপ্যতা ১৫% শতাংশের পরিবর্তে ৭.৫% করা হয়েছে।

কখন বিনিয়োগ বা অনুদান করতে হবে?

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বছর শেষে যখন আয়করের রিটার্ন তৈরি করতে যাই, তখনই আমরা আয়কর রেয়াতের হিসাবটা করে থাকি এবং আয়কর রেয়াতের খাতসমূহ খুঁজে বের করি। কিন্তু দুঃখের বিষয় তখন আর আমাদের কিছুই করার থাকে না। কারণ, আয়কর রেয়াতের সুবিধাটা নিতে হলে, অর্থবছর শেষ হওয়ার আগেই আপনাকে বিনিয়োগের পরিমাণটা নিশ্চিত করতে হবে। আয়করের অর্থবছর হচ্ছে, গতবছরের জুলাই থেকে বর্তমান বছরের জুন পর্যন্ত। আর আমরা রিটার্ন জমা দেই জুনের পরে নভেম্বর মাস পর্যন্ত।

About The Author

Leave a Reply

× Contact Support!