how to open offshore banking account

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রবাসীরা এখন সহজেই নিজের নামে বাংলাদেশে অফশোর ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট (OBU) খুলতে পারবেন এবং সেই একাউন্টে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠাতে পারবেন। এই অ্যাকাউন্টের অর্থ উনি চাইলে বিশ্বের যেকোন ব্যাংকে স্থানান্তর করতে পারবেন। বিদেশে বসবাসকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জন্য অফশোর ব্যাংকিং হিসাব খোলার নিয়মাবলী ও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর নিয়ে এই লেখায় বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। কারা অফশোর ব্যাংকিং এর অ্যাকাউন্ট করতে পারবেন এবং কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন বিস্তারিত এই লেখার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন।

আপনার বিনিয়োগের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের জন্য অফশোর ব্যাংকিং হিসাব খোলার নিয়মাবলী সম্পর্কে জানুন!

কারা অফশোর ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন?

  • অনিবাসী বাংলাদেশিসহ বিদেশে বসবাসকারী ব্যক্তি
  • বিদেশি নাগরিক
  • বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিদেশি নাগরিক
  • বিদেশে নিবন্ধিত এবং পরিচালিত কোম্পানিসমূহ/ফার্ম
  • বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী
  • বাংলাদেশের ইপিজেডের (রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল, বেসরকারি ইপিজেড, অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই টেক পার্ক) টাইপ-এ শ্রেণীভুক্ত ইউনিটসমূহ

তবে শর্ত থাকে যে, যার নামে অফশোর ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট খোলা হবে তার বয়স ১৮ বছরের উর্ধ্বে হতে হবে।

অফশোর ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট খুলতে যেসব ডকুমেন্ট প্রয়োজন

ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে অফশোর ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট খুলতে ভিন্ন ভিন্ন ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে। ব্যক্তিশ্রেণী ও প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসের তালিকা নিচে দেওয়া হলো

ব্যক্তিগত হিসাবের জন্য:

  • আপনার বৈধ ফটো আইডি: এটি হতে পারে আপনার পাসপোর্ট, বিদেশের আইডি, বা অন্য কোন বৈধ পরিচয়পত্র।
  • আপনার বাংলাদেশি পাসপোর্টের জন্য অতিরিক্ত নথি: যদি আপনার ফটো আইডি বাংলাদেশি পাসপোর্ট হয়, তাহলে আপনাকে অতিরিক্ত নথি জমা দিতে হবে। এর মধ্যে থাকতে পারে রেসিডেন্ট ভিসা, বিদেশি রেসিডেন্সি কার্ড (যেমন গ্রিন কার্ড), ওয়ার্ক পারমিট, বিদেশি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যুকৃত ড্রাইভিং লাইসেন্স, অথবা বিদেশে আপনার বসবাসের প্রমাণপত্র।
  • আপনার এবং নমিনির পাসপোর্ট সাইজ ছবি: আপনাকে দুটি পাসপোর্ট সাইজ ছবি জমা দিতে হবে, একটি আপনার এবং আরেকটি আপনার নমিনির। নমিনির ছবিটি আপনাকে অবশ্যই প্রত্যায়িত করতে হবে।
  • ঠিকানা যাচাই (প্রয়োজনে): যদি আপনার ফটো আইডিতে উল্লিখিত ঠিকানা এবং আপনার বর্তমান ঠিকানা ভিন্ন হয়, তাহলে আপনাকে অতিরিক্ত ঠিকানা যাচাই নথি জমা দিতে হবে। এর মধ্যে থাকতে পারে বিদ্যুৎ বিল, অথবা বিদেশি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যুকৃত ড্রাইভিং লাইসেন্স।

বিদেশে নিবন্ধিত কোম্পানি/ফার্মের জন্য:

  • বোর্ড রেজোলুশন/রেজোলুশনের সার-সংক্ষেপ: আপনার কোম্পানির বোর্ড কর্তৃক গৃহীত ওবিইউ হিসাব খোলার সিদ্ধান্তের একটি নথি।
  • ট্রেড লাইসেন্স: আপনার কোম্পানির ট্রেড লাইসেন্সের কপি।
  • ইনকর্পোরেশন সনদ: আপনার কোম্পানির নিবন্ধন সনদের কপি।
  • মেমোরেন্ডাম এবং আর্টিকেলস অব অ্যাসোসিয়েশন: আপনার কোম্পানির নীতিমালা ও কর্মসূচির নথি।
  • ফরম ১০ এবং ১২ (হালনাগাদ): আপনার কোম্পানির অংশীদারদের তথ্য এবং পরিচালনা পর্ষদের নাম ও পদবীর সাম্প্রতিক নথি।
  • শেয়ারহোল্ডারদের ফটো আইডি: আপনার কোম্পানির সকল শেয়ারহোল্ডারের বৈধ ফটো আইডি।
  • শেয়ারহোল্ডারদের ছবি: শেয়ারহোল্ডার প্রতিটির দুটি করে পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
  • স্বাক্ষরকারী/সুবিধাভোগী মালিকদের ছবি: আপনার কোম্পানির হিসাবের সকল স্বাক্ষরকারী এবং সুবিধাভোগী মালিকদের দুটি করে পাসপোর্ট সাইজ ছবি।

কিভাবে অফশোর ব্যাংকিং হিসাব খুলবেন

আপনি যদি অফশোর ব্যাংকিং হিসাব খোলার যোগ্য হন এবং উপরে উল্লেখিত ডকুমেন্টস থাকে তাহলে আপনি অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট (OBU) এ যেয়ে নির্ধারিত ফরম পূরণ করে আপনার অফশোর ব্যাংকিং হিসাব খুলতে পারবেন আর আপনি যদি আপনি বিদেশে অবস্থান করেন তাহলে অনলাইনেও অফশোর ব্যাংকিং হিসাব খুলতে পারবেন।

শেষকথা

এই লেখায় আমরা আলোচনা করেছি কিভাবে আপনি একটি অফশোর ব্যাংকিং (ওবিইউ) হিসাব খুলতে পারেন। আমরা দেখেছি যে ওবিইউ হিসাব বিদেশে বসবাসকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জন্য বিনিয়োগ ও সম্পদ পরিচালনার একটি দারুন সুযোগ। আশাকরি এই লেখা আপনাদের অফশোর ব্যাংকিং (ওবিইউ) হিসাব খুলতে সহজ করবে। তবে ব্যাংকভেদে অফশোর ব্যাংকিং (ওবিইউ) অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া কিছুটা ভিন্ন হতে পারে। তাই প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট (ওবিইউ) এ যোগাযোগ করতে পারেন।

About The Author

Leave a Reply