ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য পরিচালকদের ভূমিকা অপরিহার্য। তাদের দক্ষতা, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা প্রতিষ্ঠানের সাফল্যের নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করে। পরিচালকদের কাজের প্রতি আগ্রহ ও অনুপ্রেরণা বজায় রাখার জন্য তাদের সম্মানী ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধা প্রদান করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিএফআইএম সার্কুলার নং-০১ অনুযায়ী ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালকরা যেসকল আর্থিক সুবিধা পাবেন তা এই লেখায় উল্লেখ করা হলো।
ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালকের সম্মানী ও সুবিধা
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত নীতি অনুসারে, পরিচালকদের সম্মানী ও সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে কিছু নিয়মাবলী মেনে চলতে হয়। নীতিমালা অনুযায়ী ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালকগণ যেসকল সুবিধা প্রাপ্য হবেন, সেই বিষয়ে আলোচনা করা হলো।
সম্মানী
ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালকদের প্রদেয় সম্মানীর ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। পরিচালক পর্ষদের সভায় উপস্থিতির জন্য প্রতি সভায় সর্বোচ্চ ১০,০০০ টাকা সম্মানী দেওয়া যাবে। তবে, প্রতি মাসে পরিচালকগণ সর্বোচ্চ ২টি পরিচালক পর্ষদের সভা, ২টি নির্বাহী কমিটির সভা, ১টি অডিট কমিটির সভা ও ১টি ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় উপস্থিতির জন্য এই সম্মানী পাবেন। স্বতন্ত্র পরিচালকগণ প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ৫০,০০০ টাকা স্থায়ী সম্মানী পাবেন।
ভ্রমণ ভাতা ও হোটেল খরচ
দেশের অভ্যন্তরে ভিন্ন কোনো স্থান থেকে প্রধান কার্যালয়ে আসা যাওয়ার জন্য পরিচালকগণ সর্বোচ্চ ২ দিনের জন্য হোটেলে অবস্থান ও ভ্রমণ ব্যয় পাবেন। বিদেশী নাগরিক পরিচালকগণ বছরে সর্বোচ্চ ২টি সভায় অংশগ্রহণের জন্য ৩ দিনের হোটেল ও বিমান ভাড়া পাবেন। অনিবাসী বাংলাদেশী পরিচালকগণও একই সুবিধা পাবেন। তবে, সকল পরিচালককে ভ্রমন খরচ ও হোটেলে অবস্থান বিলের অর্থ পরিশোধের ক্ষেত্রে প্রকৃত খরচের রসিদ দাখিল করতে হবে।
হাইব্রিড সভা
পরিচালক পর্ষদে বিদেশি নাগরিক বা অনিবাসী বাংলাদেশি পরিচালকদের অন্তর্ভূক্তি থাকলে হাইব্রিড পদ্ধতিতে সভা আয়োজন করা যাবে। তাদের উপস্থিতি রেকর্ড করতে হবে এবং সভার আলোচ্যসূচী তাদের নিকট প্রেরণ করতে হবে।
আমাদের শেষকথা
ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালকদের সম্মানী ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধা নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ। সম্মানীর পরিমাণ যেন যুক্তিসঙ্গত হয় এবং কোম্পানির আর্থিক সক্ষমতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর উচিত পরিচালকদের সম্মানী ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধা নির্ধারণের ক্ষেত্রে একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করা। এই নীতিমালা অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রবর্তিত নীতিমালার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।