চাল রপ্তানিতে রপ্তানি ভর্তুকি প্রদান

Noor

Updated on:

Export Subsidy against export of Rice

বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ
বাংলাদেশ ব্যাংক
প্রধান কার্যালয়
ঢাকা।

www.bb.org.bd

এফই সার্কুলার নং-০৫


তারিখ : ৩০ জানুয়ারি ২০২০ ( ১৬ মাঘ ১৪২৬ )

বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেনের
সকল অনুমোদিত ডিলার।

প্রিয় মহোদয়গণ,

চাল রপ্তানিতে রপ্তানি ভর্তুকি প্রদান প্রসঙ্গে।

শিরোনামোক্ত বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণপূর্বক জানানো যাচ্ছে যে, সরকার দেশের রপ্তানি বাণিজ্যকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে দেশে উৎপাদিত ধান থেকে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে উৎপাদিত চাল রপ্তানির বিপরীতে ভর্তুকি প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এ সুবিধা আলোচ্য সার্কুলার জারির তারিখ থেকে চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে জাহাজীকৃত পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। ভর্তুকি পরিশোধ বিষয়ে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকের অনুসরণীয় নির্দেশাবলী নিম্নের অনুচ্ছেদগুলোতে বর্ণনা করা হলো :

০২। ভর্তুকির প্রাপকপক্ষ ও প্রাপ্যতার মাত্রা : দেশে উৎপাদিত ধান সংগ্রহের মাধ্যমে নিজস্ব কারখানায় প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে উৎপাদিত চাল রপ্তানির ক্ষেত্রে নিট এফওবি মূল্যের ওপর ১৫% হারে প্রক্রিয়াকারী-রপ্তানিকারক ভর্তুকি প্রাপ্য হবে। বিশেষায়িত অঞ্চল (ইপিজেড, ইজেড) এ অবস্থিত প্রতিষ্ঠান থেকে রপ্তানির ক্ষেত্রে আলোচ্য সুবিধা প্রযোজ্য হবে না। চাল রপ্তানির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত মোড়কসামগ্রীসহ অন্যান্য উপকরণের ওপর ডিউটি ড্র-ব্যাক ও শুল্ক বন্ড সুবিধা গ্রহণ করা হলে ভর্তুকি সুবিধা প্রযোজ্য হবে না।

০৩। রপ্তানি ভর্তুকির আবেদনপত্র দাখিলের শর্তাবলী :

(ক) রপ্তানিকৃত পণ্যের হ্যান্ডেলিং, মানোন্নয়ন, প্রক্রিয়াজাতকরণে নির্বাহকৃত ব্যয় এবং অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পরিবহন এবং ফ্রেইট চার্জ পরিশোধজনিত ব্যয়ের বিপরীতে ডব্লিউটিও বিধি অনুযায়ী আলোচ্য ভর্তুকি প্রদেয় হবে।

(খ) রপ্তানি ঋণপত্র/চুক্তিপত্রের আওতায় রপ্তানি পরবর্তী পর্যায়ে প্রণীত দলিলাদি কিংবা ডকুমেন্টারি কালেকশনের মাধ্যমে প্রত্যাবাসিত রপ্তানি আয়ের বিপরীতে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক শাখায় রপ্তানিকারক বিশেষ ভর্তুকির জন্য ফরম-ক অনুসারে আবেদনপত্র দাখিল করতে পারবেন। টিটি’র মাধ্যমে অগ্রিম রপ্তানিমূল্য প্রত্যাবাসনের শর্তযুক্ত রপ্তানি ঋণপত্র/চুক্তির বিপরীতে রপ্তানির ক্ষেত্রে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক শাখাকে বিদেশী ক্রেতার যথার্থতা/বিশ্বাসযোগ্যতা, মূল্যের সঠিকতা এবং বাংলাদেশ থেকে প্রকৃত রপ্তানির নিমিত্ত টিটি’র মাধ্যমে অগ্রিম মূল্য প্রত্যাবাসন সম্পর্কে টিটি বার্তার ভাষ্য ও অন্যান্য কাগজপত্রের ভিত্তিতে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে। টিটি’র মাধ্যমে অগ্রিম মূল্য পরিশোধ সরাসরি ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে (এক্সচেঞ্জ হাউস ব্যতীত) রপ্তানি আদেশ প্রদানকারী বা আমদানিকারক কর্তৃক সম্পন্ন হতে হবে এবং টিটি বার্তার ভাষ্যে আমদানি সংশ্লিষ্ট তথ্যসূত্র উল্লেখ থাকতে হবে। সকল ক্ষেত্রে ভর্তুকির আবেদনপত্র বিদেশে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের নস্ট্রো হিসাবে রপ্তানিমূল্য আকলনের (রপ্তানিমূল্য প্রত্যাবাসনের) তারিখের ১৮০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক শাখায় দাখিল করতে হবে। তবে একই রপ্তানির ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন চালানের মাধ্যমে রপ্তানির বিপরীতে ভর্তুকির আবেদনপত্র দাখিলের বিষয়ে এফই সার্কুলার নং ১২, তারিখ ২০ ডিসেম্বর ২০১২ এর নির্দেশনা অনুসরণীয় হবে।

(গ) প্রতিটি রপ্তানির স্বপক্ষে আবেদনপত্রের সাথে যথাযথ সরকারি কর্তৃপক্ষের অনুমতিপত্র থাকতে হবে।

(ঘ) রপ্তানির স্বপক্ষে প্রয়োজনীয় দলিলাদি যেমন জাহাজীকরণের প্রমাণস্বরূপ পরিবহন কর্তৃপক্ষের ইস্যুকৃত এবং প্রত্যয়নকৃত বিল অব লেডিং/এয়ারওয়ে বিল, কমার্শিয়াল ইনভয়েস, প্যাকিং লিস্ট, বিল অব এক্সপোর্ট (শুল্ক কর্তৃপক্ষের ইস্যুকৃত ও পরীক্ষিত এবং on-board হওয়া স্বপক্ষে পরিবহন কর্তৃপক্ষের প্রত্যয়নকৃত) এর পূর্ণাঙ্গ সেট ইত্যাদি দাখিল করতে হবে। পাশাপাশি পণ্য রপ্তানির স্বপক্ষে কাস্টমস্ কর্তৃপক্ষের শতভাগ Physical Verification সংশ্লিষ্ট প্রত্যয়নপত্র রপ্তানি ভর্তুকির আবেদনপত্রের সাথে দাখিল করতে হবে

০৪। অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক শাখা কর্তৃক আবেদনপত্র গ্রহণ, পরীক্ষণ ও পরিশোধ নিষ্পত্তি :

(ক) রপ্তানি ভর্তুকির আবেদন ফরমের বিভিন্ন অনুচ্ছেদে যে সকল কাগজপত্র, সনদপত্র, প্রত্যয়নপত্রের উল্লেখ আছে ঐগুলো সম্পূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ আকারে আবেদনের সাথে যুক্ত থাকার বিষয়ে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক প্রাথমিক পরীক্ষণে নিশ্চিত হবে। ভর্তুকির আবেদনপত্রের সাথে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো থেকে সংযোজিত ছক (ফরম-খ) মোতাবেক সনদপত্র দাখিল করতে হবে। রপ্তানির ক্ষেত্রে যেসকল ডকুমেন্ট ব্যাংক শাখা কর্তৃক প্রক্রিয়াকৃত হয় সেগুলোর যথার্থতা ও সেগুলোতে উল্লিখিত তথ্যাদির শুদ্ধতার বিষয়েও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শাখা নিশ্চিত হবে। প্রাথমিক পরীক্ষণে পরিলক্ষিত ত্রুটির/অসম্পূর্ণতার (যদি থাকে) বিষয়ে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক শাখা আবেদনপত্র প্রাপ্তির ০৩(তিন) কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করবে।

(খ) আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের চাল প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতার সাথে আবেদনপত্রে উল্লিখিত রপ্তানি সামঞ্জস্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার লক্ষ্যে প্রযোজ্য কাগজপত্রাদি, প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে আবেদনকারী থেকে অতিরিক্ত ব্যাখ্যা/তথ্যাদি এবং রপ্তানি ও রপ্তানিমূল্য প্রত্যাবাসন বিষয়ে ব্যাংক শাখার স্বীয় রেকর্ড থেকে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অন্য ব্যাংক শাখা থেকে সংগৃহীত তথ্যাদি/সনদপত্র সংযোজনান্তে আবেদনপত্র পূর্ণাঙ্গ ও সম্পূর্ণ আকার প্রাপ্ত হওয়ার পর অনুমোদিত ডিলার পরিশোধযোগ্য অংক নিরূপন করবে। সংশ্লিষ্ট আবেদন ফরমে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক শাখার ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত অংশের নির্দেশনাগুলো পর্যায়ক্রমিকভাবে অনুসরণ করে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।

(গ) ভর্তুকির আবেদনপত্র মোতাবেক প্রদেয় অর্থের সঠিকতার বিষয়ে নিযুক্ত বহিঃনিরীক্ষক ফার্ম দ্বারা প্রতিটি আবেদনপত্র নিরীক্ষা করাতে হবে। নিরীক্ষা কার্যক্রম সম্পাদনের পর অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের মাধ্যমে রপ্তানি ভর্তুকি বাবদ পরিশোধ্য অর্থের দাবী প্রস্তাব বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের একাউন্টস এন্ড বাজেটিং বিভাগে ফরম-গ অনুযায়ী প্রেরণ করতে হবে।বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ছাড়কৃত ভর্তুকির প্রেক্ষিতে আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে পরিশোধিত অর্থের বিবরণী ফরম-ঘ অনুসারে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের মাধ্যমে পরবর্তী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়ের বৈদেশিক মুদ্রা পরিদর্শন বিভাগে দাখিল করতে হবে।

(ঘ) প্রতিক্ষেত্রে বিশেষ ভর্তুকি পরিশোধ অনুমোদনের সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রপ্তানিমূল্য প্রত্যাবাসন সনদপত্র (গাইডলাইন্স ফর ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রানজেকশন-২০১৮, ভলিউম-১ এর এপেন্ডিক্স-৫/৩৬ অনুযায়ী), জাহাজীকরণের প্রমাণস্বরূপ বিল অব লেডিং/এয়ারওয়ে বিল, কমার্শিয়াল ইনভয়েস, প্যাকিং লিস্ট ও শুল্ক কর্তৃপক্ষের প্রত্যয়নকৃত বিল অব এক্সপোর্ট এর ওপরে সহজে দৃষ্টিগোচর হয় এমন স্থানে বিশেষ ভর্তুকি পরিশোধিত মর্মে সীল এবং পরিশোধ অনুমোদনকারী কর্মকর্তার স্বাক্ষর সন্নিবেশ করতে হবে, যাতে ঐ সকল দলিলাদি অপব্যবহারের সুযোগ না থাকে। একই রপ্তানির আওতায় একই সুবিধার জন্য একাধিকবার পিআরসি ইস্যু না হওয়ার বিষয়ে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক শাখাকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এছাড়াও আবেদনপত্র প্রক্রিয়াকরণের পূর্বে এফই সার্কুলার নং ৩১, তারিখ ২৭ ডিসেম্বর ২০০১ ; এফই সার্কুলার নং ৩০, তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৭ ও এফই সার্কুলার পত্র নং ৩১, তারিখ ০২ ডিসেম্বর ২০১৯ এর নির্দেশনা অনুসারে সংশ্লিষ্ট রপ্তানিকারকের রপ্তানিমূল্য অপ্রত্যাবাসিত না থাকার বিষয়টি অনুমোদিত ডিলার ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনলাইন এক্সপোর্ট মনিটরিং সিস্টেম থেকে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে।

(ঙ) ভর্তুকি পরিশোধ নিষ্পত্তি সংশ্লিষ্ট সকল কাগজপত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনের/সরকারী বাণিজ্যিক নিরীক্ষা বিভাগের পরীক্ষণের জন্য পরিশোধের তারিখ হতে অন্যূন ০৩(তিন) বছর পর্যন্ত শাখায় সংরক্ষণ করতে হবে।

(চ) রপ্তানি সংক্রান্ত বিষয়ে কোন অস্পষ্টতা দেখা দিলে বা তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও অডিট ফার্ম, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, টিসিবি ভবন, ১ কাওরান বাজার, ঢাকা থেকে পরামর্শ গ্রহণ করবে।

০৫। নিয়মবহির্ভূতভাবে ভর্তুকি পরিশোধের শাস্তিমূলক ব্যবস্থাদি :

(ক) বিধিবহির্ভূতভাবে ভর্তুকি পরিশোধ করা হলে পরিশোধকৃত অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে রক্ষিত পরিশোধকারী ব্যাংকের হিসাব বিকলনপূর্বক আদায় করা হবে।

(খ) সংঘটিত অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ব্যাংক কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(গ) সংঘটিত অনিয়মের সাথে রপ্তানিকারক এসোসিয়েশনের কোন কর্মকর্তা যুক্ত থাকলে অথবা মিথ্যা তথ্য দিয়ে অনিয়মে সহযোগিতা করলে রপ্তানিকারক এসোসিয়েশন/কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া যাবে।

০৬। ভর্তুকি বাবদ অর্থ পরিশোধ প্রক্রিয়া : সরকারি বাজেট বরাদ্দের বিপরীতে ছাড়কৃত তহবিল থেকে ভর্তুকির জন্য দাখিলকৃত আবেদনের বিপরীতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের অনুকূলে অর্থ প্রদান করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে বিষয়টি অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে ।

আপনাদের বিশ্বস্ত,

(মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব)
মহাব্যবস্থাপক
ফোন : ৯৫৩০১২৩

Leave a Comment