ভ্রমণ কর আইন, ২০০৩

Noor

Updated on:

ভ্রমণ কর আইন, ২০০৩

ভ্রমণ কর আইন, ২০০৩

( ২০০৩ সনের ৫ নং আইন )

বাংলাদেশ হইতে আকাশ, স্থল কিংবা জল পথে অন্য কোন দেশে যে কোন যাত্রীর গমনের ক্ষেত্রে ভ্রমণ কর আরোপ ও আদায় করিবার লক্ষ্যে প্রণীত আইন৷   

যেহেতু বাংলাদেশ হইতে আকাশ, স্থল কিংবা জল পথে অন্য কোন দেশে যে কোন যাত্রীর গমনের ক্ষেত্রে ভ্রমণ কর আরোপ ও আদায় করিবার লক্ষ্যে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;    

সেহেতু এতদ্‌দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-

ধারাসমূহ

১। সংক্ষিপ্ত শিরোনামা

১৷ এই আইন ভ্রমণ কর আইন, ২০০৩ নামে অভিহিত হইবে৷

২। সংজ্ঞা

২৷ বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে,-    

[(ক) “ভ্রমণ কর” অর্থ ধারা ৩ এর অধীন আরোপ ও আদায়যোগ্য ভ্রমণ কর ও জরিমানা;]    

(খ) “জাতীয় রাজস্ব বোর্ড” অর্থ The National Board of Revenue Order, 1972 (P.O. No. 76 of 1972) এর section 3 এর অধীন গঠিত National Board of Revenue;    

(গ) “নির্ধারিত” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান বা বিধি দ্বারা নির্ধারিত;   

 [* * *]    

(ঘ) “সার্ক” অর্থ South Asian Association for Regional Co-operation (SAARC); এবং    

(ঙ) “যাত্রী” অর্থ বাংলাদেশ হইতে অন্য কোন দেশে গমনকারী যে কোন ব্যক্তি;   

 [(চ) “ভ্রমণ কর কর্তৃপক্ষ” অর্থ ভ্রমণ কর আদায়ের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত Income-tax Ordinance, 1984 (XXXVI of 1984) এর section 2 এর clause (19) এবং clause (36) এ বর্ণিত Commissioner of Taxes এবং Inspecting Joint Commissioner of Taxes৷]

১ দফা (ক) অর্থ আইন, ২০০৫ (২০০৫ সনের ১৬ নং আইন) এর ৪১ ধারাবলে প্রতিস্থাপিত
২ দফা (গগ) অর্থ আইন, ২০০৪ (২০০৪ সনের ১৬ নং আইন) এর ৬৪ ধারাবলে বিলুপ্ত
৩ দফা (চ) অর্থ আইন, ২০০৫ (২০০৫ সনের ১৬ নং আইন) এর ৪১ ধারাবলে সনি্নবেশিত
৩। ভ্রমণ কর

৩৷ (১) বাংলাদেশ হইতে আকাশ, স্থল কিংবা জল পথে অন্য কোন দেশে গমনের ক্ষেত্রে যাত্রী প্রতি সর্বোচ্চ দশ হাজার টাকা পর্যন্ত ভ্রমণ কর আরোপ ও আদায় করা যাইবে৷

(২) সরকার, বিধি দ্বারা ভ্রমণ করের হার নির্ধারণ করিতে পারিবে৷

(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন ভ্রমণ করের হার নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত প্রত্যেক যাত্রীর নিকট হইতে নিম্ন উল্লিখিত হারে ভ্রমণ কর আরোপ ও আদায় করা হইবে যথা:-

(ক) উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকা, অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও দূর প্রাচ্যের কোন দেশে আকাশ পথে গমনের ক্ষেত্রে দুই হাজার পাঁচ শত টাকা;

(খ) সার্কভুক্ত কোন দেশে আকাশ পথে গমনের ক্ষেত্রে আট শত টাকা;

(গ) উপ-দফা (ক) ও (খ) এ উল্লিখিত দেশসমূহ ব্যতীত অন্য কোন দেশে আকাশ পথে গমনের ক্ষেত্রে এক হাজার আট শত টাকা;

(ঘ) যে কোন দেশে স্থল পথে গমনের ক্ষেত্রে পাঁচ শত টাকা;

(ঙ) যে কোন দেশে জল পথে গমনের ক্ষেত্রে আট শত টাকা; এবং

1[(চ) বারো বত্সর পর্যন্ত বয়সের যাত্রীদের ক্ষেত্রে উপ-ধারা (ক), (খ), (গ), (ঘ) এবং (ঙ) তে উল্লিখিত হারের অর্ধেক হারে৷]

(৪) ভ্রমণ কর আদায়ের পদ্ধতি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে৷

2[(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন নির্ধারিত পদ্ধতিতে আদায়কৃত ভ্রমণ কর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সরকারী কোষাগারে জমা প্রদান করিতে হইবে৷

(৬) ভ্রমন কর আদায়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা সংস্থা আদায়কৃত ভ্রমণ কর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সরকারী কোষাগারে জমা প্রদান করিতে ব্যর্থ হইলে, যেই পরিমাণ ভ্রমন কর সরকারী কোষাগারে জমা প্রদানে ব্যর্থ হইবে সেই পরিমাণ ভ্রমন কর এবং উহার উপর মাসিক শতকরা দুই শতাংশ হারে 3[জরিমানা] উক্ত ব্যক্তি বা সংস্থার নিকট হইতে আদায়যোগ্য হইবে৷]

4[(৭) উপ-ধারা (৬) এর অধীন আদেশের দ্বারা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা সংস্থা আদেশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নিকট উহা পুনঃবিবেচনার জন্য আবেদন করিতে পারিবেন৷

(৮) উপ-ধারা (৭) এর অধীন আবেদন পত্র প্রাপ্তির ৬০ দিনের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড উহা নিষ্পত্তি করিবে এবং এই ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলিয়া বিবেচিত হইবে৷]

    1 দফা (চ) অর্থ আইন, ২০০৪ (২০০৪ সনের ১৬ নং আইন) এর ৬৫ ধারাবলে সংযোজিত
    2 উপ-ধারা (৫) ও (৬) অর্থ আইন, ২০০৩ (২০০৩ সনের ১৭ নং আইন) এর ৫২ ধারাবলে সংযোজিত
    3 "জরিমানা" শব্দটি "সুদ" শব্দটির পরিবর্তে অর্থ আইন, ২০০৫ (২০০৫ সনের ১৬ নং আইন) এর ৪২ ধারাবলে প্রতিস্থাপিত
    4 উপ-ধারা (৭) ও (৮) অর্থ আইন, ২০০৫ (২০০৫ সনের ১৬ নং আইন) এর ৪২ ধারাবলে সংযোজিত
৩ক। আদায়

1[৩ক৷ আদায়কৃত ভ্রমণ কর ধারা ৩ এর উপ-ধারা (৫) এর অধীন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সরকারী কোষাগারে জমা প্রদান করিতে ব্যর্থ হইলে ভ্রমণ কর কর্তৃপক্ষ-    

(ক) সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থার ব্যাংক হিসাব জব্দ করিতে পারিবেন;    

(খ) বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিমান সংস্থার বিমান বাংলাদেশ হইতে উড্ডয়ন কার্যক্রম বন্ধ করিবার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবেন;    

(গ) সংশ্লিষ্ট বিমান সংস্থার যে কোন অর্থ বাংলাদেশের বাহিরে প্রত্যর্পণ বন্ধ করিবার বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করিতে পারিবেন 2[;    

(ঘ) Income-tax Ordinance, 1984 (XXXVI of 1984) এর section 143 তে উল্লিখিত বিধান অনুসারে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করিতে পারিবে৷]

  1 ধারা ৩ক অর্থ আইন, ২০০৫ (২০০৫ সনের ১৬ নং আইন) এর ৪৩ ধারাবলে সংযোজিত
  2 সেমিকোলন (;) দাঁড়ির (।) পরিবর্তে প্রতিস্থাপিত এবং অতঃপর দফা (ঘ) অর্থ আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ২২ নং আইন) এর ৪৬ ধারাবলে সংযোজিত
৪। অব্যাহতি

৪৷ (১) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তি শ্রেণীকে এই আইনের অধীন প্রদেয় ভ্রমণ কর হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে৷      

(২) ধারা ৩ এ যাহাই থাকুক না কেন, নিম্নশ্রেণীভুক্ত যাত্রীগণ এই আইনের অধীন প্রদেয় ভ্রমণ কর প্রদান হইতে অব্যাহতি পাইবেন, যথা:-      

[(ক) পাঁচ বৎসর বা তাহার চেয়ে কম বয়সের কোন যাত্রী;]      

(খ) ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী;      

(গ) অন্ধ ব্যক্তি;      

(ঘ) ষ্ট্র্যাচার ব্যবহারকারী পঙ্গু ব্যক্তি;      

(ঙ) বিমানে কর্তব্যরত ক্রু এর সদস্য;     

(চ) বাংলাদেশে অবস্থিত কূটনীতিক মিশনের কূটনৈতিক মর্যাদাসম্পন্ন সদস্য ও তাহাদের পরিবারের সদস্যগণ;      

(ছ) জাতিসংঘের কর্মকর্তা ও তাঁহাদের পরিবারের সদস্যগণ;      

(জ) হজ্ব ও ওমরা পালনের জন্য সৌদী আরব গমনকারী ব্যক্তি;      

(ঝ) বাংলাদেশের ভিসাবিহীন ট্রানজিট যাত্রী যাহারা বাহাত্তর ঘন্টার বেশী সময় বাংলাদেশে অবস্থান করিবেন না; এবং

(ঞ) যে কোন বিমান সংস্থায় কর্মরত বাংলাদেশী নাগরিক যিনি বিনা ভাড়ায় অথবা হ্রাসকৃত ভাড়ায় বিদেশ গমন করিবেন৷

১ দফা (ক) অর্থ আইন, ২০০৪ (২০০৪ সনের ১৬ নং আইন) এর ৬৬ ধারাবলে প্রতিস্থাপিত
৫। বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা

৫৷ সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের বিধানাবলীর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে৷

৬। প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা

৬৷ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন বা কোন বিধির বিধানের সহিত অসমঞ্জস না হয় এইরূপ প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে৷

৭। Act No. XXIII of 1980 এর section 12 এর বিলুপ্তি ও হেফাজত

৭৷ (১) Finance Act, 1980 (Act No. XXIII of 1980) এর section 12 বিলুপ্ত হইবে৷

(২) উক্ত section বিলুপ্তির অব্যবহিত পূর্বে উক্ত section এর অধীন প্রণীত বিধি এইরূপে বলবত্ থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন প্রণীত হইয়াছে৷

৮। ইংরেজীতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ

৮৷ এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজীতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ প্রকাশ করিবে, যাহা এই আইনের অনুমোদিত ইংরেজী পাঠ (Authentic English Text) নামে অভিহিত হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, এই আইন ও উক্ত ইংরেজী পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে এই আইন প্রাধান্য পাইবে৷

পূর্ণাঙ্গ আইনটি ডাউনলোড করতে নিচের বাটনে ক্লিক করুন

Leave a Comment