সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩
( ২০২৩ সনের ০৪ নং আইন )
দেশের সর্বস্তরের জনগণকে টেকসই পেনশন কাঠামোয় অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে প্রণীত আইন
যেহেতু দেশের সর্বস্তরের জনগণের বিশেষ করিয়া গড় আয়ু বৃদ্ধির কারণে ক্রমবর্ধমান বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতাভুক্ত করা প্রয়োজন; এবং
যেহেতু ভবিষ্যতে কর্মক্ষম জনসংখ্যা হ্রাসের কারণে নির্ভরশীলতার হার বৃদ্ধি পাইবে; এবং
যেহেতু সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত আনুষঙ্গিক বিষয়ে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
১। (১) এই আইন সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩ নামে অভিহিত হইবে।
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
(১) “অস্বচ্ছল চাঁদাদাতা” অর্থ পেনশন স্কিমে চাঁদা প্রদানকারী কোনো চাঁদাদাতা, যিনি শারীরিক বা মানসিক অসামর্থ্যের কারণে চাঁদা প্রদানের সক্ষমতা হারাইয়াছেন;
(২) “অ্যানুইটি” অর্থ সর্বজনীন পেনশন স্কিমে ধার্যকৃত হারে অংশগ্রহণকারী চাঁদাদাতা কর্তৃক নিরবচ্ছিন্নভাবে চাঁদা প্রদানের শর্তে তাহার বয়স ৬০ (ষাট) বৎসর পূর্তিতে আজীবন বা পেনশনে থাকাকালীন চাঁদাদাতার মৃত্যুজনিত কারণে তাহার নমিনিকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত মাসিক নির্ধারিত হারে প্রদত্ত পেনশন;
(৩) “কর্তৃপক্ষ” অর্থ ধারা ৪ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ;
(৪) “চাঁদাদাতা” অর্থ পেনশন স্কিমে চাঁদা প্রদানকারী ব্যক্তি;
(৫) “তপশিলি ব্যাংক” অর্থ Bangladesh Bank Order, 1972 (P. O. No 127 of 1972) এর Article 2(J)-তে সংজ্ঞায়িত তপশিলি ব্যাংক;
(৬) “তহবিল” অর্থ ধারা ১৬ এর অধীন গঠিত সর্বজনীন পেনশন তহবিল;
(৭) “নির্ধারিত” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত;
(৮) “নির্বাহী চেয়ারম্যান” অর্থ ধারা ৬ এর উপ-ধারা (২) এর অধীন নিযুক্ত জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান;
(৯) “পরিচালনা পর্ষদ” অর্থ ধারা ১০ এর অধীন গঠিত পরিচালনা পর্ষদ;
(১০) “পেনশনার” অর্থ ধারা ১৪ এর বিধান অনুযায়ী পেনশনপ্রাপ্ত ব্যক্তি:
(১১) “পেনশনের সম্মুখ অফিস” অর্থ পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণকারী চাঁদাদাতাগণের মাসিক চাঁদা সংগ্রহ এবং সংগৃহীত চাঁদা পেনশন তহবিলে জমাকরণের কাজে নিয়োজিত অফিস;
(১২) “প্রবিধান” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;
(১৩) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
(১৪) “সরকার” অর্থ এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগকে বুঝাইবে;
(১৫) “সর্বজনীন পেনশন তহবিল ব্যবস্থাপনা কমিটি” অর্থ ধারা ২২ এর উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত কমিটি; এবং
(১৬) “স্কিম” অর্থ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত সর্বজনীন পেনশন স্কিম।
আইনের প্রাধান্য
৩। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলি প্রাধান্য পাইবে।
জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা
৪। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, যথাশীঘ্র সম্ভব, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ নামে একটি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করিবে।
(২) কর্তৃপক্ষ একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং উহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও সাধারণ সিলমোহর থাকিবে এবং এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধান সাপেক্ষে, ইহার স্থাবর বা অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার বা হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং ইহা নিজ নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।
কর্তৃপক্ষের কার্যালয়
৫। কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় থাকিবে এবং কর্তৃপক্ষ, প্রয়োজনবোধে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, দেশের যেকোনো স্থানে উহার শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।
কর্তৃপক্ষের গঠন ইত্যাদি
৬। (১) একজন নির্বাহী চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্য সমন্বয়ে কর্তৃপক্ষ গঠিত হইবে।
(২) নির্বাহী চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং তাহাদের চাকরির মেয়াদ ও শর্ত বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
(৩) কর্তৃপক্ষসহ সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার সহিত সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানের ব্যয় সরকার নির্বাহ করিবে।
(৪) নির্বাহী চেয়ারম্যান কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হইবেন।
কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ও কার্যাবলি
৭। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ও কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথাঃ-
(ক) সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি চালু, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ণ নিশ্চিতকরণ;
(খ) সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতির আওতায় উহার চাঁদাদাতাগণের স্বার্থ সংরক্ষণ;
(গ) সর্বজনীন পেনশন স্কিম গ্রহণ, স্কিমে প্রবেশ যোগ্যতা ও শর্তসমূহ নির্ধারণ, অনুমোদন, স্কিম পরিচালনা, তত্ত্বাবধান এবং পেনশন তহবিলের পুঞ্জীভূত জমার বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা;
(ঘ) পেনশন স্কিমে চাঁদাদাতাগণের জমাকৃত অর্থের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ;
(ঙ) চাঁদাদাতাগণের অভিযোগ নিষ্পত্তি ও প্রতিকার প্রদান নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সরকারের অনুমোদনক্রমে প্রবিধান প্রণয়ন;
(চ) কর্তৃপক্ষ স্বয়ং অথবা অপর কোনো কার্যালয় বা প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিকে কর্তৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা, বাস্তবায়ন বা উহার বিষয়ে কোনো গবেষণার নিমিত্ত তথ্য সংগ্রহ বা গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা;
(ছ) জনসাধারণের মধ্যে সবর্জনীন পেনশনের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য, অবসরকালীন নিরাপত্তা ও পেনশন সম্পর্কে সম্যক ধারণা প্রদান ও বহুল প্রচারের মাধ্যমে পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করিবার পদক্ষেপ গ্রহণ;
(জ) সবর্জনীন পেনশন স্কিমের সহিত সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মচারীগণের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ;
(ঝ) সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ফি বা অন্যান্য চার্জ নির্ধারণ;
(ঞ) নির্ধারিত স্থান ও সময়ে, হিসাব সংরক্ষণ বহি ও অন্যান্য দালিলিক কাগজপত্র প্রকাশ;
(ট) সর্বজনীন পেনশন বা পেনশন তহবিল বা উহার সহিত সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয়ে কোনো অভিযোগ বা বিরোধ নিষ্পত্তি বা অনিয়ম সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের ব্যবস্থা গ্রহণ; এবং
(ঠ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, প্রয়োজনীয় অন্যান্য কার্যাবলি সম্পাদন।
ঋণ গ্রহণের ক্ষমতা
৮। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, নিজ নামে ঋণ গ্রহণ করিতে পারিবে।
কর্তৃপক্ষ কতৃর্ক সম্পত্তি ক্রোকের ক্ষমতা
৯। সর্বজনীন পেনশন স্কিম বা এই স্কিমের আওতাধীন কোনো কার্যক্রম, স্কিম অথবা প্রকল্পের সহিত সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি বা কমর্চারী এই আইন বিধি বা প্রবিধানের কোনো বিধান লঙ্ঘন করিলে আদালতের মাধ্যমে উক্ত ব্যক্তি বা কর্মচারীর সম্পত্তি বা এক বা একাধিক ব্যাংক হিসাব ক্রোক করিতে পারিবে।
পরিচালনা পর্ষদ
১০। (১) এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে একটি পেনশন পরিচালনা পর্ষদ গঠিত হইবে, যথা :-
(ক) অর্থমন্ত্রী, যিনি ইহার চেয়ারম্যানও হইবেন;
(খ) গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক;
(গ) সচিব, অর্থ বিভাগ;
(ঘ) সচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ;
(ঙ) চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড;
(চ) সচিব, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়;
(ছ) সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়;
(জ) সচিব, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়;
(ঝ) সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়;
(ঞ) সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ;
(ট) সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়;
(ঠ) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন;
(ড) সভাপতি, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই);
(ঢ) সভাপতি, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন;
(ণ) সভাপতি, বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (বিডব্লিউসিসিআই);
(ত) নির্বাহী চেয়ারম্যান, যিনি ইহার সদস্য-সচিবও হইবেন।
(২) পরিচালনা পর্ষদ, প্রয়োজনে, যে-কোনো ব্যক্তিকে পর্ষদের সভায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানাইতে পারিবে।
(৩) পরিচালনা পর্ষদ বৎসরে অন্যূন ৩ (তিন)-টি সভা অনুষ্ঠান করিবে।
(৪) পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানের সহিত পরামর্শক্রমে, নির্বাহী চেয়ারম্যান পর্ষদের সভা আহবান করিবেন এবং এইরূপ সভা পর্ষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত সময় ও স্থানে অনুষ্ঠিত হইবে।
(৫) সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যগণের উপস্থিতিতে পরিচালনা পর্ষদের সভার কোরাম গঠিত হইবে ও উপস্থিত’ সদস্যগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের ভোটে সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে।
পরিচালনা পর্ষদের কার্যাবলি
১১। (১) পরিচালনা পর্ষদ, এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, এই আইনের অধীন প্রবিধান প্রণয়নসহ কর্তৃপক্ষের যে কোনো নীতি বা কৌশল অথবা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক উত্থাপিত কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অথবা কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ প্রদান করিবে।
(২) পরিচালনা পর্ষদ পেনশন তহবিলের অর্থ সরকারি সিকিউরিটি, কম ঝুঁকিপূর্ণ অন্যান্য সিকিউরিটিজ, লাভজনক অবকাঠামো ইত্যাদি খাতে বিনিয়োগের জন্য নির্ধারিত গাইডলাইন অনুমোদন এবং, সময় সময়, প্রয়োজনীয় পরামর্শ বা দিক্নির্দেশনা প্রদান করিবে।
(৩) পরিচালনা পর্ষদ এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে যে-কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতে পারিবে।
জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ তহবিল
১২। (১) জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ তহবিল নামে কর্তৃপক্ষের একটি তহবিল থাকিবে এবং উহাতে নিম্নবর্ণিত অর্থ জমা হইবে, যথা:-
(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
(খ) এই আইনের অধীন আদায়যোগ্য ফি ও চার্জ;
(গ) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত সেবা বাবদ প্রাপ্ত অর্থ;
(ঘ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে গৃহীত ঋণ; এবং
(ঙ) অন্য কোনো উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।
(২) তহবিলের অর্থ কর্তৃপক্ষের নামে কোনো তপশিলি ব্যাংকে জমা রাখা হইবে এবং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে তহবিল হইতে অর্থ উত্তোলন করা যাইবে।
(৩) তহবিলের অর্থ হইতে কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান, সদস্য এবং কমর্কর্তা-কর্মচারীগণের বেতন-ভাতা, পারিশ্রমিক, সম্মানি ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ করা হইবে।
কর্তৃপক্ষের কর্মচারী নিয়োগ ইত্যাদি
১৩। (১) কর্তৃপক্ষ, উহার কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো সাপেক্ষে, প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে।
(২) কর্তৃপক্ষের কর্মচারীদের নিয়োগ পদ্ধতি ও চাকরির শর্তাবলি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা
১৪। (১) এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, সরকার, অবিলম্বে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নিম্নবর্ণিত বৈশিষ্ট্য-সংবলিত বা শর্তে বা পদ্ধতিতে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন করিবে, যথা :-
(ক) জাতীয় পরিচয়পত্রকে ভিত্তি ধরিয়া সবর্জনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতায় ১৮ (আঠারো) বৎসর বা তদূর্ধ্ব বয়স হইতে ৫০ (পঞ্চাশ) বৎসর বয়সি সকল বাংলাদেশি নাগরিক সর্বজনীন পেনশন স্কীমে অংশগ্রহণ করিতে পারিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, বিশেষ বিবেচনায় ৫০ (পঞ্চাশ) বৎসর ঊর্ধ্ব বয়সের নাগরিকগণও সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন এবং সেইক্ষেত্রে স্কিমে অংশগ্রহণের তারিখ হইতে নিরবচ্ছিন্ন ১০ (দশ) বৎসর চাঁদা প্রদান শেষে তিনি যে বয়সে উপনীত হইবেন সেই বয়স হইতে আজীবন পেনশন প্রাপ্য হইবেন;
(খ) সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্তির পর একজন চাঁদাদাতা ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ (দশ) বৎসর চাঁদা প্রদান-সাপেক্ষে মাসিক পেনশন পাইবার যোগ্যতা অর্জন করিবেন এবং চাঁদাদাতার বয়স ৬০ (ষাট) বৎসর পূর্তিতে পেনশন তহবিলে পুঞ্জীভূত মুনাফাসহ জমার বিপরীতে পেনশন প্রদান করা হইবে;
(গ) বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীগণ এই কর্মসূচিতে নির্ধারিত পদ্ধতিতে অন্তর্ভুক্ত হইতে পারিবেন;
(ঘ) সরকার কর্তৃক বাধ্যতামূলক করিয়া সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত, প্রাথমিকভাবে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তি স্বেচ্ছাধীন থাকিবে;
(ঙ) প্রত্যেক চাঁদাদাতার জন্য একটি পৃথক ও স্বতন্ত্র পেনশন হিসাব থাকিবে, যাহা বিধি দ্বারা পরিচালিত হইবে;
(চ) চাকরিরত চাঁদা দাতাগণ চাকরি পরিবর্তন করিলেও পূর্ববর্তী হিসাব নূতন কর্মস্থলের বিপরীতে স্থানান্তরিত হইবে, নূতনভাবে হিসাব খোলার প্রয়োজন হইবে না;
(ছ) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মাসিক সর্বনিম্ন চাঁদার হার নির্ধারিত হইবে;
(জ) মাসিক অথবা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে চাঁদা প্রদান করা যাইবে এবং অগ্রিম ও কিস্তিতে জমা প্রদানের সুযোগ থাকিবে;
(ঝ) মাসিক চাঁদা প্রদানে বিলম্ব হইলে, বিলম্ব ফিসহ বকেয়া চাঁদা প্রদানের মাধ্যমে পেনশন হিসাব সচল রাখা যাইবে এবং উক্ত বিলম্ব ফি চাঁদাদাতার নিজ হিসাবে জমা হইবে;
(ঞ) পেনশনারগণ আজীবন অর্থাৎ মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত পেনশন সুবিধা ভোগ করিবেন;
(ট) পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ (পঁচাত্তর) বৎসর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে মৃত্যুবরণ করিলে পেনশনারের নমিনি অবশিষ্ট সময়কালের (মূল পেনশনারের বয়স ৭৫ (পঁচাত্তর) বৎসর পর্যন্ত) জন্য মাসিক পেনশন প্রাপ্য হইবেন;
(ঠ) চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ (দশ) বৎসর চাঁদা প্রদান করিবার পূর্বে মৃত্যুবরণ করিলে জমাকৃত অর্থ মুনাফাসহ তাহার নমিনিকে ফেরত দেওয়া হইবে;
(ড) পেনশন তহবিলে জমাকৃত অর্থ কোনো পর্যায়ে এককালীন উত্তোলনের প্রয়োজন হইলে, চাঁদাদাতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জমাকৃত অর্থের সর্ব্বোচ্চ ৫০ (পঞ্চাশ) শতাংশ ঋণ হিসাবে উত্তোলন করা যাইবে, যাহা ধার্যকৃত ফিসহ পরিশোধ করিতে হইবে এবং ফিসহ পরিশোধিত অর্থ চাঁদাদাতার নিজ হিসাবে জমা হইবে;
(ঢ) পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসাবে গণ্য করিয়া কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হইবে এবং মাসিক পেনশন বাবদ প্রাপ্ত অর্থ আয়কর মুক্ত থাকিবে;
(ণ) সরকার কর্তৃক, সময় সময়, প্রজ্ঞাপন জারি হওয়া সাপেক্ষে, নিম্ন আয়সীমার নিচের নাগরিকগণের অথবা অস্বচ্ছল চাঁদাদাতার ক্ষেত্রে পেনশন তহবিলে মাসিক চাঁদার একটি অংশ সরকার অনুদান হিসাবে প্রদান করিতে পারিবে।
(২) সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতিতে সরকারি অথবা আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করিতে পারিবে এবং এইক্ষেত্রে কর্মী ও প্রতিষ্ঠানের চাঁদার অংশ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত হইবে;
তবে শর্ত থাকে যে, আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার কর্তৃক সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত, সরকারি ও আধাসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীগণ সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার আওতা-বহির্ভূত থাকিবে।
(৩) এই ধারার উদ্দেশ্যেপূরণকল্পে, প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
পেনশন সহায়তাকারী অফিসসমূহ
১৫। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ, সরকারের সহিত পরামর্শক্রমে, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা পরিচালনা, পেনশন তহবিল ব্যবস্থাপনা, চাঁদাদাতার চাঁদা জমাকরণ, পেনশনের অর্থ প্রদান ইত্যাদি প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক সম্মুখ অফিস প্রতিষ্ঠা বা পেনশন সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি অথবা নিয়োগ ও পরিচালনা করিতে পারিবে।
(২) তপশিলি ব্যাংক এবং ডাক অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কার্যালয়সমূহ এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্য কোনো সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পেনশনের সম্মুখ অফিস হিসাবে কাজ করিবে।
ব্যাখ্যা।- এই ধারার উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, এই আইনের আওতায় চাঁদাদাতার সহিত সরাসরি সংযোগ স্থাপনকারী প্রতিষ্ঠানই হইবে পেনশনের সম্মুখ অফিস।
সর্বজনীন পেনশন তহবিল
১৬। (১) এই আইনের আওতায় পেনশন বাবদ জমাকৃত অর্থ সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে সর্বজনীন পেনশন তহবিল গঠিত হইবে; সর্বজনীন পেনশন তহবিলে চাঁদাদাতার চাঁদা জমা, জমার হিসাব সংরক্ষণ, পুঞ্জীভূত অর্থের সুষ্ঠু ও নিরাপদ বিনিয়োগ এবং পেনশন প্রদানসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কার্যক্রম সম্পাদিত হইবে।
(২) তহবিলে অর্থের উৎস হইবে নিম্নরূপ, যথা:-
(ক) পেনশন ব্যবস্থায় নিবন্ধিত চাঁদাদাতার চাঁদা;
(খ) প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশগ্রহণমূলক চাঁদা;
(গ) বিনিয়োগকৃত অর্থের পুঞ্জীভূত মুনাফা;
(ঘ) নিম্ন আয়ের বা অসচ্ছল চাঁদাদাতাগণের জন্য সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান; এবং
(ঙ) অন্যান্য উৎস হইতে প্রাপ্ত আয়।
কেন্দ্রীয় রেকর্ড সংরক্ষণ
১৭। এই আইনের আওতায় পেনশন কার্যক্রমে রেকর্ড সংরক্ষণের জন্য বিধি দ্বারা নির্ধারিত কেন্দ্রীয় রেকর্ড সংরক্ষণ ব্যবস্থা থাকিবে।
সর্বজনীন পেনশন তহবিল ব্যবস্থাপনা
১৮। এই আইনের আওতায় চাঁদার মাধ্যমে সংগৃহীত পেনশন তহবিলের অর্থ বিনিয়োগের বিষয়টি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
সর্বজনীন পেনশন তহবিলের ব্যাংকার
১৯। বিধি দ্বারা নির্ধারিত এক বা একাধিক তপশিলি ব্যাংক জাতীয় পেনশন তহবিলের ব্যাংকার হিসাবে কাজ করিবে।
অ্যান্যুইটি সার্ভিস প্রদান
২০। চাঁদাদাতা পেনশন বয়সে উপনীত হইলে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে কর্তৃপক্ষ অ্যান্যুইটি সার্ভিস প্রদান করিবে।
সর্বজনীন পেনশন বিতরণ পরিকাঠামো
২১। কর্তৃপক্ষ ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার প্রক্রিয়ায় মাসিক পেনশন পেনশনারের নিকট নির্দিষ্ট সময়ে পৌছানো নিশ্চিত করিবে এবং এতদুদ্দেশ্যে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের আওতাধীন একটি কেন্দ্রীভূত ও স্বয়ংক্রিয় পেনশন বিতরণ পরিকাঠামো গঠন করা হইবে।
সর্বজনীন পেনশন তহবিল ব্যবস্থাপনা কমিটি
২২। (১) জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের একজন সদস্যকে সভাপতি এবং উক্ত বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সদস্য করিয়া পেনশন তহবিল ব্যবস্থাপনার জন্য একটি কমিটি থাকিবে।
(২) কমিটির কাঠামো এবং কার্যপরিধি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
সর্বজনীন পেনশনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আইন
২৩। কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সর্বজনীন পেনশনের অর্থ বা অ্যানুইটি বাবদ প্রদেয় অর্থ পরিশোধের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তির অধিকার এই আইনের অধীনে নির্ধারিত হইবে এবং উক্তরূপ বিষয়ে বাংলাদেশের আইন বা আইনসমূহ প্রযোজ্য হইবে।
কর্তৃপক্ষের বার্ষিক প্রতিবেদন
২৪। (১) কর্তৃপক্ষ ইহার অর্থ-বৎসর সমাপ্তির অনধিক তিন মাসের মধ্যে সরকারের নিকট তৎকর্তৃক পূর্ববর্তী অর্থ বৎসরে সম্পাদিত কার্যাবলি সম্পর্কে একটি বার্ষিক প্রতিবেদন দাখিল করিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন দাখিলকৃত প্রতিবেদনে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত থাকিবে, যথা :-
(ক) কর্তৃপক্ষের কর্মকাণ্ডের সার্বিক পর্যলোচনা;
(খ) সর্বজনীন পেনশন তহবিলের স্থিতি, বিনিয়োগ এবং প্রাসঙ্গিক তথ্যসমূহ;
(গ) কর্তৃপক্ষের যেসকল লক্ষ্য অর্জিত হইয়াছে উহার বিবরণ; এবং
(ঘ) কর্তৃপক্ষের যেসকল লক্ষ্য অর্জিত হয় নাই কারণসহ উহার সংক্ষিপ্ত বিবরণ।
বার্ষিক বাজেট বিবরণী
২৫। কর্তৃপক্ষ প্রতি অর্থ-বৎসর শুরুর অন্যূন তিন মাস পূর্বে পরবর্তী অর্থ বৎসরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং উহাতে উক্ত অর্থ-বৎসরে কর্তৃপক্ষের পরিচালন ব্যয় নির্বাহের জন্য সরকারের নিকট হইতে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হইবে উহার উল্লেখ থাকিবে।
ব্যাখ্যা।- এই ধারার উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, অর্থ-বৎসর অর্থ জুলাই মাসের প্রথম দিবসে যে বৎসরের শুরু এবং পরবর্তী বৎসরের ৩০ জুন যাহা শেষ হয়।
হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা
২৬। (১) কর্তৃপক্ষ, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উহার হিসাব রক্ষণ এবং হিসাববিবরণী প্রস্তুত করিবে।
(২) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, প্রতি বৎসর কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং বিদ্যমান আইন অনুযায়ী নিরীক্ষা প্রতিবেদন পেশ করিবেন।
(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত নিরীক্ষা প্রতিবেদনের উপর কোনো আপত্তি উত্থাপিত হইলে উহা নিষ্পত্তির জন্য কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
(৪) কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক কিংবা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি কর্তৃপক্ষের সকল রেকর্ড, দলিলাদি, বার্ষিক ব্যালেন্স শিট, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ জামানত, ভাণ্ডার বা অন্যবিধ সম্পত্তি ইত্যাদি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং নির্বাহী চেয়ারম্যান, সদস্য বা কর্তৃপক্ষের যে-কোনো কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।
সরকারের নিকট রিপোর্ট, ইত্যাদি দাখিল
২৭। কর্তৃপক্ষ সরকার কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত ও প্রদত্ত কোনো ফরমে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত রিপোর্ট, রিটার্ন, বিবরণী ও অন্যান্য তথ্য সরকারের চাহিদামতে ও সময়ে দাখিল করিবে।
সরকারি কর্মচারী
২৮। কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান বা সদস্য বা কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণ এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধান অনুযায়ী কার্য করিবার সময়, তাহার পক্ষে বা তাহার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে Penal Code, 1860 (Act No. XLV of 1860) এর section 21 এর সংজ্ঞা অনুযায়ী সরকারি কর্মচারী বলিয়া গণ্য হইবেন।
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
২৯। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে :
তবে শর্ত থাকে যে, বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
৩০। কর্তৃপক্ষ, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।
জটিলতা নিরসনে সরকারের ক্ষমতা
৩১। কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা ও দায়িত্ব সম্পর্কে এই আইনের বিধানে অস্পষ্টতার কারণে উহা কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা দেখা দিলে সরকার, অন্যান্য বিধানের সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া সরকারি গেজেটে আদেশ দ্বারা, উক্ত বিধানের স্পষ্ঠীকরণ বা ব্যাখ্যা প্রদান করিয়া কর্তৃপক্ষের করণীয় বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে।
ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ
৩২। (১) এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।
(২) এই আইনের বাংলা পাঠ এবং ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।