সমাজসেবা অধিদফতর থেকে স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, ফাউন্ডেশন এবং এতিমখানার মত জনকল্যাণমুখী এজেন্সিসমূহ নিবন্ধন দেওয়া হয়। সমাজসেবা অধিদফতর হতে স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহ (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ, ১৯৬১ এর ৪৬ নং অধ্যাদেশের আওতায় বিভিন্ন বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবি সংস্থা/প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন প্রদান করা হয়ে থাকে। অধ্যাদেশে অনুযায়ী নিম্ন বর্ণিত ১৫টি কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণাধীন সমাজসেবা অধিদফতর হতে নিবন্ধন প্রদান করা হয়:
শিশু কল্যাণ | যুব কল্যাণ |
নারী কল্যাণ | শারীরিক ও মানসিক অসমর্থ ব্যক্তিদের কল্যাণ |
পরিবার পরিকল্পনা | কারামুক্ত কয়েদীদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন |
নাগরিক দায়িত্ববোধ জাগ্রত করার উদ্দেশ্যে সামাজিক শিক্ষা, বয়স্কদের শিক্ষা ব্যবস্থা | সমাজ বিরোধী কার্যকলাপ হইতে জনগণকে বিরত রাখার উদ্দেশ্যে চিত্তবিনোদন কর্মসূচী |
কিশোর অপরাধীদের কল্যাণ | ভিক্ষুক ও দুঃস্থদের কল্যাণ |
সামাজিক অসমর্থ ব্যক্তিদের কল্যাণ | রোগীদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন |
বৃদ্ধ ও দৈহিক অসমর্থ ব্যক্তিদের কল্যাণ | সমাজকল্যাণ কার্যে প্রশিক্ষণ |
সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহের কল্যাণ সাধন |
সেবা
- স্বেচ্চাসেবী সমাজকল্যাণমূলক সংগঠনের নামকরণের ছাড়পত্র প্রদান;
- স্বেচ্ছােসেবী সমাজকল্যাণমূলক কার্যক্রমে আগ্রহী সংস্থা/প্রতিষ্ঠান/সংগঠন/বেসরকারি এতিমখানা/ক্লাব/লাইব্রেরীর নিবন্ধন প্রদান;
- নিবন্ধন প্রাপ্ত সংগঠনের গঠনতন্ত্র, সাধারণ ও কার্যকরী পরিষদ অনুমোদন, মেয়াদান্তে নব নির্বাচিত কার্যকরী পরিষদ অনুমোদন;
- নিবন্ধন প্রাপ্ত সংগঠনের কার্যএলাকা একাধিক জেলায় সম্প্রসাণের অনুমোদন;
- নিবন্ধন প্রাপ্ত সংগঠনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ নিস্পত্তিকরণ ব্যবস্থা গ্রহণ;
- নিবন্ধন প্রাপ্ত সংগঠসমূহের কার্যক্রম তদারকী।
কার্যক্রম বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্টগণ
সমাজসেবা অধিদফতরের কার্যক্রম শাখা এ কার্যক্রমটি বাস্তবায়ন করে থাকে। পরিচালক (কার্যক্রম) এর নেতৃত্বে অতিরিক্ত পরিচালক, উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক, সমাজসেবা অফিসার সদর দপ্তর পর্যায়ে এবং মাঠপর্যায়ে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক এ কার্যক্রম বাস্তবায়নের সাথে সংশ্লিষ্ট। জেলা পর্যায়ের উপপরিচালক ও সহকারী পরিচালক মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম তদারকি এবং মাঠ পর্যায় ও সদর দপ্তরের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে থাকেন। মাঠ পর্যায়ে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার ও শহর সমাজসেবা অফিসারগণ সংস্থার কার্যক্রম তদারকি করেন।
সেবাদান কেন্দ্র
- নামের ছাড়পত্র, নিবন্ধন, কার্যকরী কমিটি অনুমোদন ইত্যাদি সেবার জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা সমাজসেবা কার্যালয়;
- সংশ্লিষ্ট জেলার বাইরে কার্য এলাকা সম্প্রসারণের জন্য সমাজসেবা অধিদফতরের সদর কার্যালয়;
- অভিযোগ নিস্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা সমাজসেবা কার্যালয় এবং সদর কার্যালয়
নিবন্ধন প্রদান প্রক্রিয়া
নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের চেকলিস্ট
প্রস্তাবিত সংস্থার নামের ছাড়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি ১ কপি |
পূরণকৃত ‘বি’ ফরম (ফরম জেলা সমাজসেবা কার্যালয় হতে বিনামূল্যে সংগ্রহ করা যাবে)-১ কপি জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা, সেগুনবাগিচা, ঢাকা কর্তৃক নিরাপত্তা ছাড়পত্র |
১-২৯৩১-০০০০-১৮৩৬ কোডে জমাকৃত ৫,০০০ (পাঁচ হাজার) টাকার ট্রেজারী চালান রশিদ-১ কপি |
সংস্থার গঠনতন্ত্রের (প্রতি পৃষ্ঠায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সীলসহ স্বাক্ষরযুক্ত) মূল কপি-৩ সেট |
কার্যকরী পরিষদ ও গঠনতন্ত্র অনুমোদন সংক্রান্ত সভার কার্যবিররণী (প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড অফিসার কর্তৃক সত্যায়িত)-১ কপি |
কার্যকরী পরিষদ গঠন ও সদস্যদের নাম, পদবী, পেশা, ঠিকানাসম্বলিত (স্থায়ী ও বর্তমান) ও নিজ স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা-১ কপি |
প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড অফিসার কর্তৃক সত্যায়িত সভাপতি, সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ প্রত্যেকের ছবি ১ কপি করে মোট-৩ কপি ছবি |
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক প্রত্যায়িত সাধারণ সদস্যদের নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, স্বামীর নাম (বিবাহিত নারীর ক্ষেত্রে), পেশা, স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা এবং নিজ স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা-১ কপি |
সংস্থার কর্মসূচি (কার্যক্রম বাস্তবায়ন পদ্ধতিসহ) আলাদা কাগজে ১ কপি করে মোট-২ কপি |
সংস্থার কার্যালয়ের মূল দলিলের সত্যায়িত ফটোকপি (নিজস্ব জমি থাকলে) অথবা ৩০০ (তিনশত) টাকার নন জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে কার্যালয় ভাড়ার চুক্তিপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি (নিজস্ব জমি না থাকলে) জমা দিতে হবে |
বেসরকারি এতিমখানার ক্ষেত্রে ‘খ’ ও ‘গ’ শ্রেণীভুক্ত পৌরএলাকা/ ইউনিয়ন পর্যায়ের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫(পাঁচ) শতক জমির দলিলের সত্যায়িত ফটোকপি জমা দিতে হবে |
প্রতিষ্ঠানের/ সংস্থার আসবাবপত্রের তালিকা (সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরযুক্ত)-১ কপি |
প্রতিষ্ঠানের আয়ের উৎস সম্পর্কিত বিবরণী |
প্রতিষ্ঠানের সম্ভাব্য আয়-ব্যয়ের বাজেট (সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরযুক্ত)-১ কপি |
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর/ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এর সুপারিশপত্র-১ কপি |
কার্যকরী পরিষদের সদস্যগণ একই পরিবারের সদস্য নন মর্মে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরযুক্ত প্রত্যয়ন পত্র-১ কপি |
এক্সিকিউটিভ বডির সদস্যগণ সংস্থায় চাকুরী করেন না মর্মে প্রত্যয়ন পত্র |
সংস্থার নামের ছাড়পত্রের আবেদন
১. নিবন্ধন গ্রহণে আগ্রহী সংস্থাকে প্রথমে ‘সংস্থার নামের ছাড়পত্র’ এর জন্য ‘পরিশিষ্ট-১’ অনুযায়ী নিবন্ধনকারী কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করতে হবে
২. ‘সংস্থার নামের ছাড়পত্রের’ আবেদনের সাথে যেসকল কাগজপত্রাদি জমা দিতে হবে
(১) প্রস্তাবিত সংস্থার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দুই কপি করে ১ম শ্রেণীর গেজেটেড কর্মকর্তা কর্তৃক সত্যায়িত ছবি
(২) প্রস্তাবিত সংস্থার নামকরণ সংক্রান্ত সভার কার্যবিবরণী(১ম শ্রেণীর গেজেটেড কর্মকর্তা কর্তৃক সত্যায়িত) ১ কপি
(৩) প্রস্তাবিত সংস্থার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর সম্বলিত সংস্থার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য- ১ কপি
(৪) নিবন্ধনকালে সকল সদস্যের জাতীয় পরিচয়পত্রের ছায়ালিপি (১ম শ্রেণীর গেজেটেড কর্মকর্তা কর্তৃক সত্যায়িত)
কোন সংস্থা নামের সাথে “জাতীয়” বা “বাংলাদেশ” শব্দ ব্যবহার করতে পারবে না, তবে প্রাথমিকভাবে স্থানীয় পর্যায়ে নিবন্ধনের পর মহাপরিচালক, সমাজসেবা অধিদফতরের নিকট “জাতীয়” বা “বাংলাদেশ” শব্দ সংযুক্ত করার জন্য আবেদন করতে পারবে। মহাপরিচালক প্রয়োজনীয় তদন্ত সাপেক্ষে যথার্থ ও যৌক্তিক বিবেচিত হলে “জাতীয়” বা “বাংলাদেশ” শব্দ যুক্ত করার অনুমতি দিতে পারবেন
এ অধ্যাদেশে বিদেশী কোন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধন প্রদান করা যাবে না
আবেদনকারীগণ বাংলাদেশের নাগরিক হবেন, রক্ত সম্পর্কীয় একই পরিবারের ২ জনের বেশী সদস্য কার্যকরি সদস্য পদে থাকতে পারবে না। এছাড়া স্থানীয় জনগণের অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে
সংস্থার নামের সাথে অন্য কোন দেশের নাম যুক্ত করা হলে সংশ্লিষ্ট হাইকমিশন/এ্যাম্ব্যাসী/ মিশনের অনাপত্তিপত্র আবেদনের সাথে যুক্ত করতে হবে
সরকারি বা বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা/কর্মচারি কল্যাণ সমিতির নামকরণের ক্ষেত্রে সংশ্লি¬ষ্ট দপ্তর/সংস্থা প্রধানের অনাপত্তিপত্র আবেদনের সাথে যুক্ত করতে হবে
মাল্টিপারপাস বা বহুমুখী/ফ্ল্যাট/বাড়ী/দোকান/বাস/রিক্সা/পরিবহণ/মালিক/বণিক/শ্রমিক/ভাড়াটিয়া কল্যাণ সমিতি/ইউনিয়ন বিদ্যমান অধ্যাদেশের ২(চ) ধারায় বর্ণিত কার্যক্রমের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং এসকল সমিতি সমবায় আইনে নিবন্ধন গ্রহণ সমীচীন। তবে এধরণের সমিতি নিবন্ধিত হয়ে থাকলে তাদের কার্যক্রম যাচাই করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে
জাতীয় বা আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব, লেখক, শিল্পী ও বুদ্ধিজীবী কোন ব্যাক্তির নামে সংস্থার নামকরণের ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তির নিজ অথবা তার পক্ষে পরিবারের কোন ব্যক্তির অনাপত্তিপত্র আবেদনের সাথে যুক্ত করতে হবে; সাধারণ ব্যক্তির নামে সংস্থা নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সংস্থার নামে অনুদান হিসেবে ন্যূনতম ৫.০০ লক্ষ টাকা সংশ্লিষ্ট সংস্থার ব্যাংক হিসাবে জমা দেয়া হয়েছে মর্মে প্রমাণপত্র আবেদনের সাথে যুক্ত করতে হবে
মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সাথে সংশ্লিষ্ট কোন প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন করা যাবে না, এ ধরণের প্রতিষ্ঠান মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল হতে নিবন্ধন গ্রহণ করতে পারে
সরকারি কোন প্রকল্প/কর্মসূচি/কার্যক্রম/নির্দেশনা বাস্তবায়নার্থে কোন সংস্থার নামের ছাড়পত্র প্রদানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নির্দেশিত নামে ছাড়পত্র প্রদান করতে হবে, এক্ষেত্রে আবেদনকারীকে উক্ত নির্দেশনাপত্র আবেদনের সাথে যুক্ত করতে হবে
এতিমখানা/শিশু সদন/পরিবার নিবন্ধনের পূর্বে ১৯৪৪ সালের এতিমখানা এবং বিধবা সদন আইনের ৫ ধারামতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের অনুজ্ঞাপত্র গ্রহণ করতে হবে এবং কোন ক্রমেই মাদ্রাসা নিবন্ধন করা যাবে না
রোগী কল্যাণ ও পুনর্বাসন সমিতি ব্যতিত মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র, ক্লিনিক, হাসপাতাল বা কেবল মাত্র চিকিৎসা সংক্রান্ত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য রয়েছে এ ধরণের কোন সংস্থাকে নিবন্ধন প্রদান করা যাবে না
একাডেমী, নিকেতন, স্কুল, কলেজ, টেকনিক্যাল কলেজ বা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ইত্যাদি শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠানের নামে কোন সংস্থার নামের ছাড়পত্র প্রদান ও নিবন্ধন করা যাবে না
সংস্থার নামের ছাড়পত্রের আবেদন যাচাই
‘সংস্থার নামের ছাড়পত্র’ প্রদানের পূর্বে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ নিম্নবর্ণিত বিষয়াদি যাচাই করবে
- ‘সংস্থার নামের ছাড়পত্র’ এর আবেদন অত্র পরিপত্রে বর্ণিত নিয়মে করা হয়েছে কিনা?
- ইতোপূর্বে একই নামে কোন সংস্থা নিবন্ধন প্রদান করা হয়েছে কিনা?
- কোন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অন্য আইনে নিবন্ধিত হলে যৌক্তিক কারণ ব্যতিত নামের ছাড়পত্র দেয়া যাবে না এবং নিবন্ধন দেয়া যাবে না। ট্রাস্ট এর জন্য পৃথক আইন থাকায় অত্র অধ্যাদেশের আওতায় কোন ট্রাস্ট নিবন্ধন করা যাবে না।
- সংস্থার নাম স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণমূলক ধারণার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা?
- প্রাক নিবন্ধন ছক মোতাবেক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার প্রতিবেদন পাওয়া গিয়াছে কিনা?
- সংস্থার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ‘জাতীয় সমাজকল্যাণ নীতি’ ও স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহ (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ, ১৯৬১ এবং স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহ (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) বিধি, ১৯৬২ এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা?
সংস্থার নামের ছাড়পত্রের আবেদন সংশোধনের সুযোগ
স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহ (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ, ১৯৬১ এবং স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহ (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) বিধি, ১৯৬২ বা অত্র পরিপত্রে বর্ণিত পদ্ধতি অনুযায়ী আবেদনকারী সংস্থাকে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার নামের ছাড়পত্র প্রদান সম্ভব না হলে সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে লিখিতভাবে অবহিত করে নাম সংশোধনের জন্য সুযোগ প্রদান করতে হবে।
সংস্থার নামের ছাড়পত্র প্রদান
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ‘নামের ছাড়পত্র’ আবেদন যথাযথভাবে যাচাইপূর্বক নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে ‘পরিশিষ্ট-২’ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে ‘নামের ছাড়পত্র’ প্রদান করবেন।
নিবন্ধন প্রাপ্তির আবেদন
- স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘নামের ছাড়পত্র’ প্রাপ্তির ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিনের মধ্যে নিবন্ধন প্রাপ্তির জন্য নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ বরাবর স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহ (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ, ১৯৬১ অনুযায়ী আবেদন করতে হবে
- কোন সংস্থার কর্মকর্তাগণ ‘নামের ছাড়পত্র’ এর মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে, মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য নিবন্ধনকারী কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করতে পারবে। নিবন্ধনকারী কর্তৃপক্ষ উক্ত আবেদন যুক্তিসঙ্গত মনে করলে নিবন্ধনের আবেদন জমা দেয়ার মেয়াদ সর্বোচ্চ ৩০ (ত্রিশ) দিন পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে পারবে; ২য় বারেও ‘নামের ছাড়পত্র’ এর মেয়াদ শেষ হলে সংশিষ্ট সংস্থাকে নতুনভাবে নামের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে হবে
- নিবন্ধন আবেদনের সাথে প্রত্যেক সংস্থাকে ‘পরিশিষ্ট-৩’ এ বর্ণিত চেকলিস্ট অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র/ রেকর্ডপত্র জমা দিতে হবে
- নিবন্ধনকালে আবেদনের সাথে দাখিলকৃত রেকর্ডপত্র/কাগজপত্রের সাথে অধ্যাদেশের তফশীল বহির্ভূত কোন কার্যক্রম বিশেষ করে ক্ষুদ্রঋণ ও সঞ্চয় কার্যক্রম করবে না মর্মে অঙ্গীকারপত্র জমা দিতে হবে
- নিবন্ধন লাভে আগ্রহী সংস্থার গঠনতন্ত্র ‘পরিশিষ্ট-৪’ অনুযায়ী হতে হবে
- স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কার্যকরী কমিটির সদস্য সংখ্যা ৫,৭, ৯, ১১, ১৩ বা তদূর্ধ বিজোড় সংখ্যার সমপরিমাণ হবে। এক্ষেত্রে লক্ষণীয় যে, কার্যকরী পরিষদের ন্যূনতম সদস্য ৭ (সাত) জন হবে এবং কার্যকরী পরিষদের সদস্য সংখ্যার ন্যূনতম ৩ গুণ সাধারণ সদস্য থাকতে হবে, উল্লেখ্য যে, কার্যকরী পরিষদের এক পঞ্চমাংশ মহিলা সদস্য থাকতে হবে
- গত ৩০/০৪/১৯৮৯ খ্রিঃ তারিখে জারিকৃত সরকারি প্রজ্ঞাপন মূলে মহিলা স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানসমূহের নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ মহিলা বিষয়ক অধিদফতর। এ ধরণের প্রতিষ্ঠান জেলা পর্যায়ে মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের কার্যালয় হতে নিবন্ধন প্রদান করা হয় বিধায় সমাজসেবা অধিদফতরে এ ধরণের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার নিবন্ধন আবেদন গ্রহণ করা যাবে না।
নিবন্ধন পূর্ব যাচাই
- নামের ছাড়পত্রে বর্ণিত শর্তাবলি পালন করেছে কি না ?
- ‘পরিশিষ্ট-৩’ এ বর্ণিত চেকলিস্ট অনুযায়ী সকল কাগজপত্র জমা হয়েছে কি না ?
- স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির গঠনতন্ত্র ‘পরিশিষ্ট-৪’ এ বর্ণিত নির্দেশিকামতে প্রণয়ন করা হয়েছে কি না ?
- নিবন্ধনের জন্য জমাদানকৃত সকল কাগজপত্র সঠিক আছে কি না ?
- স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহ (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ, ১৯৬১ এবং স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহ (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) বিধি, ১৯৬২ বা অত্র পরিপত্র অনুযায়ী আবেদনকারী সংস্থার আবেদনে ভুলভ্রান্তি থাকলে তা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময় উল্লেখপূর্বক তা সংশোধনের জন্য সুযোগ প্রদান করতে হবে।
নিবন্ধন পূর্ব তদন্ত পরিচালনা
আবেদন গ্রহণের পর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা নিবন্ধন পূর্ব তদন্ত পরিচালনা করতে হবে। নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ হিসেবে উপপরিচালক স্বয়ং অথবা তাঁর মনোনীত কোন কর্মকর্তা বা সংশ্লিষ্ট উপজেলা/ইউসিডি সমাজসেবা কর্মকর্তা তদন্তকার্য সম্পন্ন করবেন এবং ‘পরিশিষ্ট-৫’ এ বর্ণিত ছক অনুযায়ী তদন্ত প্রতিবেদন নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ বরাবর দাখিল করবেন
নিবন্ধন প্রদান
- নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা নিবন্ধনের পর সনদ প্রদানের পাশাপাশি এ সংক্রান্ত কতিপয় শর্ত সম্বলিত একটি অবগতিপত্র নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ নিবন্ধন প্রাপ্ত সংস্থাকে প্রদান করবেন ‘পরিশিষ্ট-৬’
- সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং-সকম/প্রষ্ঠিান/বিবিধ-৮/৯৯(অংশ-১)-৯৬ তারিখ: ০১-৪-১৯৯৯ খ্রিঃ মূলে জারীকৃত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী অধ্যাদেশের ২(ঙ) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতা বলে জেলা সীমা রেখার মধ্যে রেজিস্ট্রেশন কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক
- যে সকল জেলায় উপপরিচালক নেই সে সকল জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত/অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক বা সমাজসেবা অফিসারগণ অধ্যাদেশ মোতাবেক নিবন্ধন প্রদানসহ নিবন্ধিত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কার্যকরী কমিটি ও গঠনতন্ত্রও অনুমোদন করবে (পরিশিষ্ট-১২)
- নিবন্ধনকারী কর্তৃপক্ষ কোন সংস্থার নিবন্ধনের আবেদন প্রত্যাখান করলে সেক্ষেত্রে সংস্থা কর্তৃপক্ষ ইচ্ছা করলে ৩০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট অধ্যাদেশের ৬ ধারা মোতাবেক সচিব, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় বরাবরে আপীল করতে পারবে। সচিব,সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আদেশই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে
নিবন্ধন পরবর্তী সময়ে করণীয়
- নিবন্ধন প্রদানের পর নিবন্ধনকারী কর্তৃপক্ষ অবশ্যই ‘পরিশিষ্ট-৭’ মোতাবেক সংস্থাসমূহের তথ্য সংরক্ষণ করবেন এবং ইতোমধ্যে যে সকল সংস্থা নিবন্ধিত হয়েছে তার রেকর্ডও একই পদ্ধতিতে লিপিবদ্ধ করতে হবে
- প্রতিটি নিবন্ধন প্রাপ্ত সংস্থার জন্য আলাদা আলাদা নথি সংরক্ষণ করতে হবে
- প্রতি মাসের ০৭ (সাত) তারিখের মধ্যে সকল জেলার উপপরিচালকগণ সদর কার্যালয়ে ‘পরিশিষ্ট-৮’ মোতাবেক নন্ট্যাক্স রেভিনিউ হিসাবসহ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা নিবন্ধনের প্রতিবেদন প্রেরণ করবেন
- মাঠ পর্যায়ে উপপরিচালক, সহকারি পরিচালক, সমাজসেবা অফিসার(রেজিঃ), শহর সমাজসেবা অফিসার এবং উপজেলা সমাজসেবা অফিসারগণ প্রত্যেকে ১২-৪-১৯৯৮ তারিখে জারিকৃত পরিপত্র অনুযায়ী তাঁর আওতাভুক্ত এলাকার মধ্যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা/এতিমখানার কার্যক্রম পরিদর্শন করে নিয়মিত সদর দফতরে ‘পরিশিষ্ট-৯’ অনুযায়ী প্রতিবেদন পাঠাবেন। এ ছাড়া প্রতি মাসে সদর কার্যালয়ের পরিচালক(কার্যক্রম) ১টি, অতিরিক্ত পরিচালক(কার্যক্রম-১) ২টি এবং উপপরিচালক (নিবন্ধন) ৩টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা (জাতীয়/স্থানীয়) পরিদর্শন করবেন
- নিবন্ধন গ্রহণের পর জেলা সদরে অবস্থিত সংস্থাসমূহকে নির্ধারিত ফি প্রদানপূর্বক শহর সমাজসেবা কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে ‘সমন্বয় পরিষদের’ তালিকাভুক্ত(অভভরষরধঃবফ) হতে হবে এবং তালিকাভুক্তির পর প্রতিটি সংগঠনের ০২ দুই জন প্রতিনিধি উক্ত সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সদস্য হতে হবে
- “আর্থিক বৎসর ” বলিতে ১৮৯৭ সালের সাধারণ দফাসমূহ আইনে (১৮৯৭ সালের ১০নং আইন) প্রদত্ত একই অর্থ বুঝাইবে
- সংশ্লিষ্ট বিধির ৯(গ) ধারা মতে আয়-ব্যয়ের হিসাব-যা প্রত্যেক আর্থিক বৎসরের শেষে প্রস্তুুত করতে হবে এবং রেজিষ্ট্রিকরণ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত কোন সনদপ্রাপ্ত হিসাব পরীক্ষক বা হিসাব নিরীক্ষক বা হিসাব নিরীক্ষকগণ কর্তৃক নিরীক্ষিত হবে এবং আর্থিক বৎসর শেষ হওয়ার পর ছয় মাসের মধ্যে তা উক্ত কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করতে হবে
- সংশ্লিষ্ট বিধির ৯(২) ধারা মতে সংস্থার নগদ টাকা বা ভান্ডার তত্ত্বাবধান বা পরিচালনার জন্য দায়িত্ব সম্পন্ন প্রত্যেক কর্মচারীকে উপযুক্ত আর্থিক সংগতি সম্পন্ন কোন বীমা কোম্পানীর নিকট হতে “সততা মুচলেকা” আকারে সংস্থা কর্তৃক নির্ধারিত পরিমান অর্থের একটি জামানত দিতে হবে এবং উক্ত মুচেেলকার একটি অনুলিপি রেজিস্ট্রিকরণ কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করতে হবে।
সংস্থার গঠনতন্ত্র ও কার্যকরী পরিষদ অনুমোদন
- নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত কোন সংস্থার গঠনতন্ত্র আইনতঃ বৈধ বলে বিবেচিত হবে না। একইভাবে গঠনতন্ত্রের সংশোধনী আনা হলে তা নিবন্ধনকারী কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত কার্যকর হবে না।
- কার্যকরী পরিষদের মেয়াদান্তে সংস্থার গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নতুন কার্যকরী কমিটি নির্বাচিত হবে।
- একজন ব্যাক্তি সর্বোচ্চ ২টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কার্যকরি পরিষদের সদস্য হতে পারবেন
- সংশ্লিষ্ট সংস্থা নব নির্বাচিত কার্যকরী পরিষদটি নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন গ্রহণ করবে। নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত কোন কার্যকরী পরিষদ উক্ত সংস্থার বৈধ কার্যকরী পরিষদ হিসেবে বিবেচিত হবে না। নব নির্বাচিত কার্যকরী পরিষদের অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট সমাজসেবা কর্মকর্তার মাধ্যমে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করতে হবে। সংস্থার বার্ষিক প্রতিবেদন, অডিট রিপোর্ট, নির্বাচন সংক্রান্ত কাগজপত্র সম্পর্কে সকল আপটুডেট তথ্য সন্তোষজনক বিবেচিত হলে এবং সরকারি কোন প্রতিষ্ঠানের আরোপিত শর্ত ভঙ্গ না করলে দাখিলকৃত কার্যকরী পরিষদ অনুমোদন দেয়া যাবে
সংস্থার কার্যএলাকা সম্প্রসারণ
- স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা নিবন্ধনের পর একাধিক জেলায় কার্যএলাকা সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজনীয়তা কাগজপত্রসহ সংশ্লিষ্ট উপপরিচালকের মাধ্যমে ‘পরিশিষ্ট-১০’ অনুযায়ী মহাপরিচালক, সমাজসেবা অধিদফতরের নিকট আবেদন করতে পারবে; তবে জনস্বার্থে কোন সংস্থার কার্যএলাকা সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয় প্রতীয়মান হলে মহাপরিচালক, সমাজসেবা অধিদফতর বিশেষ বিবেচনায় উক্ত সংস্থাকে এক বা একাধিক জেলায় কার্যএলাকা সম্প্রসারণের অনুমতি দিতে পারবেন
- একাধিক জেলায় কার্যক্রম সম্প্রসারণের অনুমতি প্রাপ্ত বা জাতীয়ভাবে স্বীকৃত স্বে”চ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থার কার্যকরী কমিটি অনুমোদন ও গঠনতন্ত্র সংশোধন, ডুপ্লিকেট সনদপত্র প্রদানসহ অন্যান্য বিষয় সংশ্লিষ্ট জেলার উপপরিচালক (যে জেলা হতে প্রাথমিকভাবে নিবন্ধন প্রাপ্ত) পরীক্ষান্তে মতামতসহ অনুমোদনের জন্য সদর কার্যালয়ে প্রেরণ করবেন
ডুপ্লিকেট সনদপত্র ইস্যু
নিবন্ধিত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার নিবন্ধন সনদপত্র হারিয়ে/পুড়ে/নষ্ট হয়ে গেলে নির্ধারিত শর্তপূরণ সাপেক্ষে (স্থানীয় থানায় জিডি, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি ও ট্রেজারী চালানসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার আবেদনের প্রেক্ষিতে) প্রতিরূপ(ডুপ্লিকেট) সনদপত্র জারি করতে পারবেন।