ঢাকা মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর থেকে এর জনপ্রিয়তা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য এই যানবাহনটি নির্ধারিত সময়ের ভিতর যাত্রীকে তার গন্তব্যে পৌছে দিতে পারে। আর সুবিধার জন্যই ঢাকা নাগরিকরা শহরের জ্যাম থেকে বাঁচতে মেট্রোরেল ব্যবহার করছে। যার ফলে মেট্রোরেলে ভ্রমণ ইচ্ছুক যাত্রীদের ভীড় বৃদ্ধি হওয়াতে মেট্রোর টিকিটের লাইনও দীর্ঘায়িত হচ্ছে। কিন্তু আপনার কাছে যদি MRT Pass থাকে তাহলে আপনি টিকিটের লাইনে সময় নষ্ট না করে দ্রুত মেট্রোতে উঠে যেতে পারেন। MRT Pass কী, এর সুবিধা ও কিভাবে MRT Pass নিবেন সবকিছুই এই লেখায় জানতে পারবেন।
MRT Pass কী?
MRT পাস হল ঢাকা মেট্রোরেলে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অসংখ্যবার ভ্রমণের সুবিধা প্রদানকারী একটি কার্ড। এই কার্ড Near-field communication (NFC) অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ভিত্তিক একটি সংযোগবিহীন স্মার্ট আইসি কার্ড। এই কার্ডটি ক্রয় করলে ব্যবহারকারীরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যতবার ইচ্ছা মেট্রোরেলে ভ্রমণ করতে পারবেন।
MRT পাস ক্রয়ের জন্য ব্যবহারকারীকে নির্ধারিত টিকিট অফিসে নিবন্ধন ফরমে তথ্য প্রদান করতে হবে। পাসের প্রাথমিক মূল্য ৫০০ টাকা। এরমধ্যে নিরাপত্তা জামানত ২০০ টাকা ও ব্যবহারযোগ্য অর্থের পরিমাণ ৩০০ টাকা। MRT পাস ব্যবহারের জন্য মেট্রোরেলে প্রবেশের সময় পাসটি মেট্রোরেল কার্ড রিডারে স্পর্শ করতে হবে। পাসটিতে যত টাকা থাকবে, ততবার ব্যবহার করা যাবে।
MRT Pass এর সুবিধা
MRT পাস ব্যবহারের অনেক সুবিধা রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হল:
- সময় ও অর্থ বাঁচায়: MRT পাস ব্যবহার করলে ব্যবহারকারীদের প্রতিবার টিকিট কিনতে হয় না। ফলে সময় ও অর্থ বাঁচে। এছাড়া বর্তমানে এমআরটি পাস ব্যবহার করে ভ্রমণ করলে যাত্রীর ভাড়ার উপর ১০% ছাড় পাওয়া যায়।
- সুবিধাজনক: MRT পাস ব্যবহার করলে ব্যবহারকারীরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যতবার ইচ্ছা মেট্রোরেলে ভ্রমণ করতে পারেন।
- নিরাপদ: MRT পাসটি একটি ইলেকট্রনিক কার্ড। তাই এটি হারানো বা চুরি হওয়ার সম্ভাবনা কম।
কিভাবে এমআরটি পাস কার্ডটি নিবেন?
সকাল ৭.৩০ মিনিট হতে রাত ৭.৩০ মিনিট পর্যন্ত মেট্রোরেলের যেকোন স্টেশনের Excess Fare Office (অথবা Customer Service Center) থেকে সরাসরি নিবন্ধন করে এমআরটি পাস কার্ডটি ইস্যু করা যায়। কার্ডটি ইস্যু করতে যেসকল তথ্যের প্রয়োজন তা হলো:
১. ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ওয়েবসাইট থেকে একটি ফর্ম ডাউনলোড করে পূরণ করুন অথবা স্টেশন হতে ফ্রিতে ফরমটি নিয়ে পূরণ করুন।
২. ফরমটিতে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা পাসপোর্টের ফটোকপি, মোবাইল নম্বর লিখে পূরণ করুন।
৩. ফর্মটি মেট্রোরেলের যেকোনো টিকিট কাউন্টারে জমা দিন।
৪. ৫০০ টাকা (২০০ টাকা জামানত + ৩০০ টাকা ব্যালেন্স) জমা দিন।
৫. কার্ডটি গ্রহণ করুন।
MRT পাস কার্ডের মেয়াদ ১০ বছর। কার্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তা আর ব্যবহার করা যাবে না। মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই পাসে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ রিচার্জ করা উচিত।
এমআরটি পাস কার্ড হারিয়ে গেলে করণীয়
এমআরটি পাস হারিয়ে গেলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে পুনঃ ইস্যু এর জন্য নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। অব্যবহৃত স্থিতি স্বয়ংক্রিয়ভাবে নতুন এমআরটি পাসে স্থানান্তরিত হবে। এই ক্ষেত্রে-
১. ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এমআরটি পাস পুনঃইস্যু এর জন্য প্রসেসিং ফি বাবদ ২০০টাকা জমা দিতে হবে।
২. হারিয়ে যাওয়া এমআরটি পাস পুনঃইস্যু এর জন্য পুনরায় নিরাপত্তা জামানত ২০০ টাকা এবং প্রসেসিং ফি বাবদ ২০০ টাকা মোট ৪০০ টাকা জমা দিতে হবে।
৩. পুনঃইস্যুর পর হারিয়ে যাওয়া পাসটি খুঁজে পাওয়া গেলে এবং ব্যবহারযোগ্য হলে ৫০ টাকা সার্ভিস চার্জ প্রদান করে নিরাপত্তা জামানত ফেরত পাওয়া যাবে।
শেষকথা
মেট্রোরেল ঢাকাবাসীর প্রতিদিনের যাতায়ত এখন সহজ ও দ্রুত করে দিয়েছে। আর এমআরটি পাস সেই যাত্রাকে আরও আধুনিককরণ করেছে। আপনি নির্জঝ্ঞাট মেট্রোরেলে ভ্রমণ করতে পারবেন। এছাড়া এমআরটি পাস ব্যবহারে যাত্রা খরচ হতে ১০% ছাড় পাওয়া যাচ্ছে।