অনেক ফ্রিল্যান্সার ভ্যাট সংক্রান্ত বিধান সম্পর্কে অনিশ্চিত থাকেন। কখনো কখনো ব্যাংক রেমিট্যান্স থেকে ভ্যাট কেটে রাখে, আবার কখনো করে না। এই বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা না থাকায় অনেকেই বিপাকে পড়েন। বর্তমানে বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত। অনেক তরুণ-তরুণী মফস্বলে বসে ফ্রিল্যান্সিং-এর মাধ্যমে আয় করছেন এবং দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছেন।
ফ্রিল্যান্সিং কী?
বাংলাদেশে বসে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করে অনলাইনে পাঠিয়ে দেওয়াকেই ফ্রিল্যান্সিং বলে। এটি মূলত তথ্যপ্রযুক্তি (ICT) সংশ্লিষ্ট কাজ। ডাটা এন্ট্রি, ওয়েব ডিজাইন, ওয়েবসাইট তৈরি, কনটেন্ট রাইটিং, সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন (SEO), ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট (VA) ইত্যাদি কাজ ফ্রিল্যান্সিং-এর মাধ্যমে করা হয়। বৈদেশিক মুদ্রায় ব্যাংকের মাধ্যমে পেমেন্ট আসে এবং ব্যাংক এনক্যাশমেন্ট সার্টিফিকেট ইস্যু করে।
ফ্রিল্যান্সিং এ ভ্যাট প্রযোজ্য কিনা?
বৈদেশিক মুদ্রায় ব্যাংকের মাধ্যমে পেমেন্ট পাওয়া গেলে এবং ব্যাংক থেকে এনক্যাশমেন্ট সনদপত্র ইস্যু করা হলে এই কাজ রপ্তানি বলে বিবেচিত হয়। রপ্তানি ভ্যাটমুক্ত। তাই, কোনো ভ্যাট প্রযোজ্য হবে না, ব্যাংক উৎসে ভ্যাট কর্তন করবে না। এ সংক্রান্ত হাইকোর্টের একটা আদেশে বলা হয়েছে যে, এনক্যাশমেন্ট সনদপত্র ইস্যু করা হলে সে লেনদেন রপ্তানি বলে গণ্য হবে। (রীট পিটিশন নং-৪১৩২/২০০২, ১১ বিএলসি ১৮০)।
কেন ফ্রিল্যান্সিং সেবা রপ্তানি হিসাবে বিবেচিত হবে?
- রপ্তানির বিপরীতে আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করি।
- বৈদেশিক মুদ্রা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের সাথে যোগ হয়।
- এই রিজার্ভ দিয়ে আমরা দেশের আমদানির মূল্য পরিশোধ করি।
শেষকথা
ফ্রিল্যান্সিং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্পষ্ট নীতিমালা এবং সঠিক তথ্য প্রদানের মাধ্যমে এই খাতের আরও বিকাশ সম্ভব। কিন্তু আইনী জটিলতা ও অষ্পষ্টতার কারণে অনেক সময়েই ফ্রিল্যান্সারদের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তাই আশাকরি এই বিষয়ে সরকার আরও সহজবোধ্য ব্যাখা করবে।