ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন, ২০২৩ এর ধারা ১৫ এর উপ-ধারা (১২) অনুসারে, ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোতে সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পরিচালক পর্ষদ গঠন, পরিচালকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কিত নীতিমালা জারি করা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে, বাংলাদেশ ব্যাংক ডিএফআইএম সার্কুলার নং-০১ এর মাধ্যমে ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক পর্ষদের গঠন এবং পরিচালকগণের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কিত নীতিমালা প্রসঙ্গে দিক নির্দেশনা প্রদান করেছে। এই নীতিমালা অনুযায়ী, পরিচালক পর্ষদ শেয়ারধারক পরিচালক, শেয়ারধারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি পরিচালক এবং স্বতন্ত্র পরিচালকদের সমন্বয়ে গঠিত হবে।
একটি ফাইন্যান্স কোম্পানি কতজন পরিচালক থাকবে, কিভাবে পরিচালক পর্ষদের পরিচালক নিয়োগের অনুপাত, পরিচালকদের মেয়াদ ও অবসরগ্রহণ সম্পর্কে বিস্তারিত ও সহজ ভাষায় আমরা এই লেখায় জানতে পারবো।
ফাইন্যান্স কোম্পানিতে পরিচালক সংখ্যা
- পরিচালক সংখ্যা: সর্বোচ্চ ১৫ জন
- স্বতন্ত্র পরিচালক: অন্যূন ২ জন
- পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণ:
- ৫% বা তার বেশি শেয়ারের অধিকারী: সর্বোচ্চ ২ জন পরিবারের সদস্য
- ২%-৫% শেয়ারের অধিকারী: সর্বোচ্চ ১ জন পরিবারের সদস্য
- বিদেশি শেয়ারহোল্ডার: শেয়ার অনুপাত অনুযায়ী
- প্রতিনিধি পরিচালক:
- একজন প্রাকৃতিক ব্যক্তির স্বার্থসংশ্লিষ্ট পক্ষ থেকে মনোনীত ব্যক্তি হতে পারবেন না।
- কোনো প্রতিষ্ঠান/কোম্পানির পক্ষে ১ জনের বেশি প্রতিনিধি নিযুক্ত করা যাবে না।
- শেয়ারধারকের পক্ষে অন্য ব্যক্তি প্রতিনিধি হতে পারবেন না।
ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালকের মেয়াদ
ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক পদের মেয়াদ ৩(তিন) বছর। একাদিক্রমে ৩ মেয়াদ বা ৯ বছরের বেশি পরিচালক পদে থাকা যাবে না। ৩ বছর বিরতির পর পুনরায় নিযুক্ত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করা যাবে। তবে, ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন, ২০২৩ কার্যকরের পূর্বে ৯ বছর পূর্ণকারী পরিচালকদের মেয়াদ শেষ হওয়ার সাথে সাথে পদ শূন্য হবে।
ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালকদের অবসর গ্রহণ
প্রথম বার্ষিক সাধারণ সভায় সকল পরিচালক অবসর গ্রহণ করবেন। এরপর প্রতি বছর জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে এক-তৃতীয়াংশ পরিচালক অবসর গ্রহণ করবেন। অবসর গ্রহণকারী পরিচালক পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার যোগ্য হবেন।
আমাদের শেষকথা
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই নতুন নীতিমালা অনুযায়ী ফাইন্যান্স কোম্পানিতে পরিচালক পর্ষদ গঠন ও অবসরগ্রহণ সম্পর্কে ষ্পষ্ট ধারণা পাওয়া গেছে, যা ফাইন্যান্স কোম্পানিকে তাদের পরিচালক পর্ষদ গঠন কর্মকান্ডকে সহজ করবে। আশা করা যায়, এই নীতিমালা ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে।