নং ০২/মূসক/২০১৯-উপর্যুক্ত বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণপূর্বক নির্দেশক্রমে জানানো যাচ্ছে যে,
বর্তমানে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশে অনলাইনে পণ্য বিক্রয় সেবাটি খুব দ্রুত জনপ্রিয় হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রজ্ঞাপন এসআরও নং-১৮৬-আইন/২০১৯/৪৩-মূসক, তারিখ : ১৩ জুন, ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ এর মাধ্যমে সেবার কোড S০৯৯.৬০ এর আওতায় “অনলাইনে পণ্য বিক্রয়” সেবার ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে। উক্ত ব্যাখ্যা অনুযায়ী “অনলাইনে পণ্য বিক্রয় অর্থ ইলেক্ট্রনিক নেটওয়ার্ক ব্যবহারের মাধ্যমে সেই সকল পণ্য ও সেবার ক্রয়-বিক্রয়কে বুঝাইবে যাহা ইতোপূর্বে কোনো উৎপাদনকারী বা সেবা প্রদানকারীর নিকট হইতে মূসক পরিশোধপূর্বক গৃহীত হইয়াছে এবং যাহাদের নিজস্ব কোনো বিক্রয় কেন্দ্র নাই।” সেবাটি মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর তৃতীয় তফসিলের টেবিল-১ এর “খ–খ” ভুক্ত সেবা হওয়ায় এ সেবার বিপরীতে ৫ শতাংশ হারে মূসক প্রযোজ্য।

০২। অনলাইনে পণ্য বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান Business Process পর্যালোচনায় দেখা যায়, এ ধরনের সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ বিভিন্ন উৎস হতে করযোগ্য এবং কর অব্যাহতিপ্রাপ্ত উভয় ধরনের পণ্য সংগ্রহ করে নিজেরা মূলত একটি বিক্রয় মাধ্যম (Sales Channel) হিসেবে কাজ করে গ্রাহক পর্যায়ে পৌঁছে দেয় এবং উক্ত গ্রাহকগণ এ সকল পণ্যের চূড়ান্ত ভোক্তা। এ সেবা প্রদানের বিনিময়ে অনলাইনে পণ্য বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানসমূহ মূলত পণ্যের মূল সরবরাহকারী/উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হতে কমিশন, ফি, সার্ভিস চার্জ, রেভিনিউ শেয়ারিং বা অন্যবিধভাবে সেবামূল্য গ্রহণ করে থাকে। মূল্য সংযোজন কর একটি ভোক্তা কর বিধায় এ করের চূড়ান্ত দায়ভার ভোক্তার উপরেই বর্তায়।ফলে, অনলাইনে পণ্য বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানসমূহ মূল উৎপাদনকারী/সরবরাহকারী হতে করযোগ্য পণ্য মূসক ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক পরিশোধপূর্বক সংগ্রহ করে উক্ত একই মূল্যে চূড়ান্ত ভোক্তার নিকট সরবরাহ করলে পুনরায় সম্পূর্ণ মূল্যের উপর মূসক পরিশোধ করতে হবে না। কেননা, এক্ষেত্রে দ্বৈত-কর আরোপিত হয়ে যায়। তবে, এক্ষেত্রে কর পরিশোধের প্রমাণক হিসেবে মূসক চালানপত্র/ট্রেজারি চালানের কপি অনলাইনে পণ্য বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের দখলে থাকতে হবে। এ পণ্য গ্রাহক পর্যায়ে সরবরাহের বিপরীতে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানসমূহ নিজেদের প্রদত্ত সেবার বিপরীতে যে সেবামূল্য প্রাপ্ত হয়ে থাকে সে সেবামূল্যের বিপরীতে ৫ শতাংশ হারে মূসক আদায়যোগ্য হবে। উল্লেখ্য যে, এ সকল প্রতিষ্ঠান প্রথম তফসিলভুক্ত মূসক অব্যাহতিপ্রাপ্ত পণ্য, যেমন : শাকসবজি, মাছ, চাল, ডাল, মাংস ইত্যাদি গ্রাহক পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রেও কোনো সেবামূল্য প্রাপ্ত হলে সেক্ষেত্রে উক্ত সেবামূল্যের বিপরীতে ৫ শতাংশ মূসক প্রযোজ্য হবে। কেননা সরবরাহকৃত পণ্যসমূহ প্রথম তফসিল দ্বারা অব্যাহতি হলেও “অনলাইনে পণ্য বিক্রয়” সেবা অব্যাহতিপ্রাপ্ত নয় এবং এক্ষেত্রে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান অনলাইন সেবা সরবরাহ করছে। সামগ্রিক প্রক্রিয়ায় অনলাইনে পণ্য বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানসমূহ করযোগ্য কিংবা কর অব্যাহতিপ্রাপ্ত যে কোনো ধরনের পণ্যই সরবরাহ করা হউক না কেন, প্রাপ্ত সেবামূল্যের বিপরীতে ৫ শতাংশ হারে মূসক প্রযোজ্য হবে। তবে শর্ত থাকে যে, অনলাইনে পণ্য বিক্রয়কারী কর্তৃক সংগৃহীত পণ্য/সেবার বিপরীতে সরবরাহ গ্রহণ পর্যায়ে প্রযোজ্য মূসক পরিশোধ করা না হলে উক্ত পণ্য/সেবার বিপরীতে ক্রেতা বা ভোক্তা কর্তৃক প্রদত্ত পণ্য বা মূল্যে (পণ্য/সেবার মূল্য ও অনলাইন সার্ভিস চার্জ সহ) উপর সংশ্লিষ্ট পণ্য/সেবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হারে মূসক আদায়যোগ্য হবে।

০৩। মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি ১১৮ ক এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে
এ ব্যাখ্যাপত্র জারি করা হলো।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক প্রণীত এই ব্যাখাপত্রটি নিচের ডাউনলোড লিংক থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন

Show CommentsClose Comments

Leave a comment